Image description

সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে লেখা পদত্যাগপত্রের একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি।

 

ওই চিঠিতে রুশনারা লেখেন, অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি আমার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করছি। লেবার সরকার গঠনে অংশ নেওয়া এবং পরে দায়িত্ব পালন করা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মানজক বিষয়। আপনার প্রতি আমার অব্যাহত অঙ্গীকার ও সমর্থন বজায় থাকবে।

রুশনারা উল্লেখ করেন, গত এক বছরে এই সরকারের মাধ্যমে যে পরিবর্তন এসেছে, তার অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করে আমরা সামাজিক ও সাশ্রয়ী আবাসনের ক্ষেত্রে রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছি এবং গৃহহীনতা ও রাস্তার বসবাস মোকাবিলায় প্রায় এক বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ দিতে পেরেছি। আমি গর্বিত যে, এই সরকারের নির্বাচন কৌশল বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছি, যার ফলে এমন আইন পাস হয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা ও উন্নত করবে—যেমন বিদেশি অনুদানের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ, ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার প্রদান এবং জনজীবনে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বৃহত্তর পরিসরে এমন এক সরকারের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত, যারা এনএইচএসে বিনিয়োগ, কমিউনিটিগুলো পুনর্গঠন, বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত এবং বিশ্বমঞ্চে ব্রিটেনের অবস্থান তুল ধরছে। আপনার নেতৃত্বে ব্রিটেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সক্ষমতা দেখিয়েছে। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে এবং একটি রূপরেখা তৈরি করতে আমাদের মিত্রদের সঙ্গে কাজ করা, যার মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগও রয়েছে।

আমি আপনাকে এবং উপ-প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমাকে এই লেবার সরকারের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ জনগণের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।

সম্প্রতি পূর্ব লন্ডনের নিজস্ব টাউনহাউস থেকে ৪জন ভাড়াটিয়াকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রুশনারার বিরুদ্ধে। এরপর সেই বাড়ির ভাড়া বাড়িয়ে ৭০০ পাউন্ড করেন তিনি। এক সময় ভাড়াটিয়াদের শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকলেও; নিজেই এই কাজ করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

সিলেটে জন্ম নেওয়া রুশনারা আলী ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি। গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকার বেথনালগ্রিন ও স্টেপনি আসন থেকে তিনি পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের ওই আসনে ২০১০ সাল থেকে টানা এমপি নির্বাচিত হয়ে আসছেন তিনি।