
ভারতীয় মিডিয়া মানেই যেনো ফ্যাসিস্ট হাসিনার বন্দনা আর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পা চাটা সব বানোয়াট গল্পধারা। কিন্তু, সেসব থেকে এবার ব্যতিক্রম দেখা গেলো কলকাতা টিভির ইন্দ্রাণী দাশগুপ্তের একটি রিপোর্ট। যেখানে গতানুগতিক ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার প্রশংসার বিপরীতে গিয়ে করা হয়েছে মুণ্ডুপাত, হাসিনাকে সম্বোধন করা হয়েছে গণহত্যাকারী পলাতক ফ্যাসিস্ট হিসেবে। আর প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দ্বার করানো হয়েছে কাঠগড়ায় এমন নির্লজ্জ বেহায়া খুনিকে ফিরিয়ে না দিয়ে উল্টো কড়া পাহারায় রাখার জন্য।
ভারতীয় প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমটির ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ নামের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থাপিকা ইন্দ্রাণী যেনো এদিন নেমে পড়েছিলেন সত্যটা সমগ্র ভারতবর্ষের সামনে তুলে ধরতে। হাসিনা ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার এক বছরের মাথায় গত ৪ আগষ্ট এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয় টেলিভিশনটির পর্দায়। যেখানে এই উপস্থাপিকাকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসির বরাত দিয়ে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় হাসিনার সেই মারণাস্ত্র ব্যবহারের কলরেকর্ডের সত্যতা তুলে ধরতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী সেসময় হাসিনা ১৪০০ নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে বলে তাকে গণহত্যাকারী হিসেবেও আখ্যা দিতেও দ্বিধাবোধ করেননি তিনি।
উপস্থাপিকা ইন্দ্রাণী এরপর তুলে ধরেন হাসিনার বিচারকার্যের বিষয়টি। হাসিনার নামে বাংলাদেশে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূস বারবার হাসিনাকে ফেরত চাইলেও মোদি প্রশাসনের মুখে কুলুপ আঁটার বিষয়টিও সামনে নিয়ে আসেন তিনি। সর্বশেষ ড. ইউনূস নৈতিক বিবেক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারতের প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান। আর গত ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে চিঠির মাধ্যমে খুনি হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ। কিন্তু, এখনো বিষয়টি নিয়ে কেন চুপ মোদি সরকার সেই প্রশ্ন রেখে উদ্বেগ জানাতে দেখা যায় ভারতীয় এই সাংবাদিককে।
এরপর তিনি মন্তব্য করেন, ‘পুরোনো বন্ধুত্ব কিংবা রাজনৈতিক কোন মতবাদ দিয়ে তো আর সাধারণ মানুষের গণহত্যাকে ন্যয্যতা দেওয়া যায় না।’ এসময় এই উপস্থাপিকা ভারতের কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রাখেন ভারতীয় সাধারণ মানুষরা তো আন্তর্জাতিক অপরাধী ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়ানোর কারণটাও জানেন না মোদি সরকারের। আর অন্যদিকে হাসিনা, যে নিজ দেশেই গণহত্যার অপরাধে অপরাধী তাকে কিভাবে আশ্রয় দেয় মোদি সরকার? এটাও জানতে চান এই সাংবাদিক।
ইন্দ্রানী এরপর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারত সবকিছুর পরও শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেবে, তাকে এই ভূখণ্ডে বসেই রাজনীতি করতে দেবে। সেই কথাটিই না হয় বলুন! কিন্তু, মোদি জি চুপ করে বসে আছেন। শেখ হাসিনা ওনার কাছে এক ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ যখন ইচ্ছা তখন ভাঙ্গাবেন।’
ভারতীয় এই গণমাধ্যমটি আর সাংবাদিক ইন্দ্রাণী স্বৈরাচার গণহত্যাকারী হাসিনার মুখোশ খুলে দিয়ে সত্যটা জাতির সামনে তুলে ধরায় বেশ প্রশংসিত হচ্ছেন ভারত ছাপিয়ে বাংলাদেশ তথা বিশ্বজুড়ে। ভারতীয় গোদি মিডিয়াগুলোর গতানুগতিক ধারা থেকে বেড়িয়ে সত্যটা তুলে ধরায় অনেকে কৃতজ্ঞতাও জানাচ্ছেন তাদের প্রতি। কিন্তু, এরপরও কি ঠিক হবে কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদী মোদি? এপরপরও কি দাদাবাবুরা ফিরিয়ে দেবে ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী হাসিনাকে? সেই প্রশ্ন যেনো থেকেই যায়।