
গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের অস্ত্র বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্লোভেনিয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এটি প্রথম পদক্ষেপ। খবর আল জাজিরার।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক সরকারি বৈঠকের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট গোলোব এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন। সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েল থেকে এবং ইসরায়েলের উদ্দেশে যে কোনো ধরনের অস্ত্র আমদানি, রপ্তানি ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
স্লোভেনিয়া জানায়, ইইউ অভ্যন্তরে মতবিরোধ ও অনৈক্যের কারণে যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি, তখন আমাদের উচিত নিজেদের দায়িত্ব পালন করা, এমনকী যদি সেটা অন্যদের আগেই হয়।
সরকারি বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজায় মানবিক সহায়তা পরিকল্পিতভাবে বন্ধ করে দেওয়ার ফলে মানুষ মারা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের উচিত পদক্ষেপ নেওয়া।
সরকার আরও জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের কাছে কোনো ধরনের সামরিক সরঞ্জাম বা অস্ত্র রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এর আগে জুলাই মাসের শুরুতে স্লোভেনিয়া দুইজন ইসরায়েলি কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রীকে ‘অপ্রিয় ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে। তাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ‘গণহত্যামূলক বক্তব্য’ দেওয়ার অভিযোগ আনে দেশটি।
২০২৪ সালের জুনে স্লোভেনিয়া পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। এটি ছিল ইইউ’র মধ্যে অন্য দেশ আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেনের মতো পদক্ষেপ।
সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল এসব ঘোষণাকে ‘হামাসকে পুরস্কৃত করার সমান’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
প্রায় ২২ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধে ইতোমধ্যেই ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের বরাতে জানা গেছে। অনেক মানুষ এখন অনাহারের ঝুঁকিতেও রয়েছে, যা ইসরায়েলের অবরোধের ফল বলে উল্লেখ করা হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকাসহ একাধিক দেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র পুরো সময়জুড়েই ইসরায়েলের অটল মিত্র হিসেবে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে সেটি হবে ‘হামাসের জন্য পুরস্কার’।