Image description

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে বুধবার একটি শক্তিশালী নতুন আর্থ মনিটরিং রাডার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এটি পৃথিবীর ভূমি ও বরফ-পৃষ্ঠের সূক্ষ্ম পরিবর্তন শনাক্ত করতে পারবে এবং প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয় পূর্বাভাসে সহায়তা করবে।

নিসার (নাসা-ইসরো সিনথ্যাটিক অ্যাপারচার রাডার) নামের এ ট্রাক আকৃতির মহাকাশযানটি ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে ইসরোর জিওসিংক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল রকেটে চড়ে মহাকাশে পাড়ি জমায়।

বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত প্রত্যাশিত এ মিশনটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার নিদর্শন হিসেবে প্রশংসা পাচ্ছে।

নাসার আর্থ সায়েন্স বিভাগের পরিচালক ক্যারেন সেন্ট জার্মেইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের গ্রহের পৃষ্ঠে প্রতিনিয়ত অর্থবহ পরিবর্তন ঘটে। কিছু পরিবর্তন ধীরে ঘটে, কিছু  হঠাৎ করে ঘটে। কিছু পরিবর্তন বড়, কিছু আবার সূক্ষ্ম। ভূপৃষ্ঠের উল্লম্ব গতিবিধির এক সেন্টিমিটার মতো ছোট পরিবর্তন শনাক্ত করতে সক্ষম নিসার।

 
এটি  ভূমিকম্প, ভূমিধস, আগ্নেয়গিরি থেকে শুরু করে বাঁধ ও সেতুর মতো পুরনো অবকাঠামো পর্যন্ত প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করবে।’

 

সেন্ট জার্মেইন বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকাসহ আমরা ভূমির সংকোচন ও স্ফীত হওয়া, চলাচল, বিকৃতি এবং গ্লেশিয়ার ও বরফ গলার চিত্র দেখতে পারব। আমরা বনভূমির আগুনও দেখতে পারব।’

১২ মিটার চওড়া একটি ডিশ নিয়ে মহাকাশে যাওয়া নিসার পৃথিবী থেকে ৪৬৪ মাইল উচ্চতা থেকে প্রতি ১২ দিনে একবার পৃথিবীর প্রায় সব ভূমি ও বরফাঞ্চলের চিত্র ধারণ করবে।

 
কক্ষপথে ঘুরে বেড়ানোর সময় স্যাটেলাইটটি ক্রমাগত মাইক্রোওয়েভ সঙ্কেত পাঠাবে ও পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত সংকেত গ্রহণ করবে।

 

নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি ও ভারতের ইসরো যৌথভাবে এ প্রকল্পে কাজ করেছে। উভয় পক্ষ পৃথকভাবে স্যাটেলাইটটির বিভিন্ন অংশ তৈরি করে ও পরে ভারতের বেঙ্গালুরুতে ইসরোর স্যাটেলাইট ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড টেস্টিং এস্টাবলিশমেন্টে একত্র করে পরীক্ষা চালায়।

এ প্রকল্পে নাসার খরচ প্রায় ১২০ কোটি ডলার আর ইসরোর খরচ হয়েছে প্রায় ৯ কোটি ডলার।

ভারতের মহাকাশ কর্মসূচি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

 
২০১৪ সালে তারা মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে একটি স্যাটেলাইট স্থাপন করে এবং ২০২৩ সালে চাঁদে রোবট ও রোভার অবতরণ করে সফল হয়।

 

সম্প্রতি ভারতীয় বিমানবাহিনীর টেস্ট পাইলট শুভাংশু শুক্লা প্রথম ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে যান। এটি ভারতের নিজস্ব মহাকাশযান কর্মসূচির আওতায় ২০২৭ সালে পরিকল্পিত মানব মহাকাশ মিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

সূত্র : এএফপি