
প্রলয়নকারী পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যখন বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ আর উত্তেজনা, ঠিক তখনই তুরস্কের পক্ষ থেকে সামনে এলো এক নতুন চমক। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন বাহিনী এমন একটি অপারমাণবিক বোমা প্রকাশ করেছে, যা যুদ্ধের ময়দানে তুলনাহীন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম। এই ভয়ংকর বোমার নাম ‘গাজাব’।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র (RDC) তৈরি করেছে বোমাটি, যেটি এখন পর্যন্ত প্রচলিত বোমার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে দাবি করেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ। ছয় দিনব্যাপী সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর প্রথম দিনেই গাজাবকে প্রকাশ্যে আনা হয়, যা মুহূর্তেই তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিশ্বজুড়ে।
গাজাব নামের এই বোমার ওয়ারহেডের ওজন প্রায় ২০০০ পাউন্ড। এটি বিমান থেকে নিক্ষেপযোগ্য এবং এর বিস্ফোরণে আশেপাশের এলাকায় তাপমাত্রা পৌঁছায় প্রায় ৩০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে—যা ইস্পাত পর্যন্ত গলিয়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট। অর্থাৎ শত্রুপক্ষের কোনো অস্ত্র বা সুরক্ষা বলয় এতে টিকে থাকার সুযোগই থাকবে না।
তবে গাজাব সব ধরনের যুদ্ধবিমান থেকে ছোঁড়া যাবে না। এটি শুধুমাত্র F-4 ফ্যান্টম বা F-6 যুদ্ধবিমান থেকে ব্যবহার করা যাবে। এটি মূলত MK সিরিজ ঘরানার বোমা, তবে প্রচলিত সেই সিরিজের অন্যান্য বোমার তুলনায় তিন গুণ বেশি ধ্বংসাত্মক। সাধারণ এমকে সিরিজের বোমায় প্রতি মিটারে বিস্ফোরক উপাদান থাকে ৩.২ মাত্রায়, সেখানে গাজাবে এই অনুপাত ১০.৩ থেকে ১৩ পর্যন্ত—যা এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাকে এক ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজাব পারমাণবিক বোমা না হলেও তার ধ্বংসের ক্ষমতা পারমাণবিক অস্ত্রের পরেই অবস্থান করছে। অর্থাৎ এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর অপারমাণবিক বোমাগুলোর একটি। এই অস্ত্র তুরস্কের সামরিক সক্ষমতার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গাজা, সিরিয়া, কুর্দি সীমান্ত বা ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য সংঘাতে এই বোমা ব্যবহারের আশঙ্কাও এখন জোরালভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। বিশ্বের সামরিক ভারসাম্যে তুরস্কের এই নতুন অস্ত্র ঠিক কতটা পরিবর্তন আনবে, তা নিয়ে কৌশলগত মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।