
প্রথমবারের মতো ইইউ দেশগুলোর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ইসরায়েলি মন্ত্রীকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ (পারসোনা নন গ্রাটা) হিসেবে ঘোষণা করেছে স্লোভেনিয়া। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন ও বেসামরিক মানুষের ভয়াবহ দুর্দশার প্রতিবাদে এমন ঘোষণা দেয়া হয়।
স্লোভেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তানিয়া ফায়ন বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ-কে স্লোভেনিয়ায় ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হবে।’ এই ঘোষণা স্লোভেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করা হয়। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফায়ন আরও বলেন,‘এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের একটি মাধ্যম। সেই সঙ্গে তাদের আহ্বান জানানো যে গাজায় চলমান অসহনীয় পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে এবং বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ থামাতে হবে।’
স্লোভেনিয়ার সরকার মনে করে, গাজায় ইসরায়েলের এই দুই মন্ত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত নেতিবাচক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের পেছনে তাদের দায় রয়েছে।
‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা মানে হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ওই দেশে অপ্রিয়, অবাঞ্ছিত ও অনুপ্রবেশ-অযোগ্য ঘোষণা করা। এটি সাধারণত কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভেঙে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় কোনো বিদেশি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়, তবে এবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেয়া হলো।
ইতামার বেন-গভির ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রয়েছেন।
বেজালেল স্মোটরিচ ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী, যিনি সাম্প্রতিক যুদ্ধকে সমর্থন করে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকে উসকে দিয়েছেন।
ইসরায়েলের গাজা অভিযান এবং বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে চাপ বাড়ছে। অনেক দেশ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে।
তবে স্লোভেনিয়ার এই পদক্ষেপ এক ধরনের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করল, যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সরাসরি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।
গাজায় ‘অসহনীয় পরিস্থিতির’ জন্য তাদের দায়ী করছে স্লোভেনিয়া। ইইউভুক্ত কোনো দেশের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে।
শীর্ষনিউজ