
ভারতের হায়দ্রাবাদ রাজ্যের নামপল্লি এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে মানুষের কঙ্কাল। পুলিশের ধারণা, এটি আমির খান নামে এক ব্যক্তির দেহাবশেষ, যিনি প্রায় ১০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। কঙ্কালের পাশে পাওয়া গেছে একটি পুরনো নোকিয়া ফোন ও ২০১৬ সালে বাতিল হওয়া রুপির (ভারতীয় মুদ্রা) নোট।
হায়দ্রাবাদ পুলিশ জানায়, ওই বাড়ির মালিক মুনির খান নামে এক ব্যক্তি, যিনি ১০ সন্তানের জনক ছিলেন। তার তৃতীয় ছেলে আমির খান একাই ওই ঘরে থাকতেন। অন্য সন্তানেরা অন্যত্র বসবাস করছিলেন। গত সোমবার (১৪ জুলাই) স্থানীয় এক কিশোর ক্রিকেট বল খুঁজতে গিয়ে ওই বাড়িতে ঢোকে এবং ভেতরের দৃশ্য ভিডিও করে। ভিডিওতে দেখা যায়, রান্নাঘরের মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে একটি কঙ্কাল, আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাসন-কোসন।
হায়দরাবাদ পুলিশের সহকারী কমিশনার কিশন কুমার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, কঙ্কালের পাশে পাওয়া পুরনো নোকিয়া ফোনটি মূল সূত্র হয়ে দাঁড়ায়। ফোনটির ব্যাটারি নষ্ট থাকলেও মেরামতের পর দেখা যায়, ২০১৫ সালে ফোনটিতে ৮৪টি মিসড কল এসেছিল। এতে করে ধারণা করা হচ্ছে, সেই সময়েই আমির মারা যান।
পুলিশ কর্মকর্তা কিশন কুমার আরও বলেন, ‘ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৫০ বছর হবে। তিনি অবিবাহিত ছিলেন এবং সম্ভবত মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন। তার শরীরে কোনো ধস্তাধস্তি বা আঘাতের চিহ্ন নেই, রক্তের দাগও পাওয়া যায়নি। আমরা মনে করছি, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু হতে পারে। এমনকি হাড়গুলো ভেঙে ভেঙে যাচ্ছে, যা দীর্ঘ সময় আগে মৃত্যুর ইঙ্গিত দেয়।’
তিনি বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, তার কোনো ভাইবোন বা পরিচিত কেউ এতো বছরে একবারও তার খোঁজ নেয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক।’
পুলিশ জানায়, বালিশের নিচে পাওয়া গেছে বাতিল হয়ে যাওয়া ৫০০ ও ১,০০০ রুপির বেশ কয়েকটি নোট। এর মাধ্যমে ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৬ সালের আগেই আমিরের মৃত্যু হয়েছিল।
মৃত ব্যক্তির ছোট ভাই শাদাব, যিনি ওই এলাকায় নিজেদের দোকানগুলোর ভাড়া সংগ্রহ করতেন, কঙ্কালের পাশে পাওয়া একটি আঙুলের আংটি ও শর্টস দেখে ভাইকে শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় সোমবার ভারতের CLUES (Crime Scene Logical Unit of Evidence Search) নামের বিশেষ তদন্তকারী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে। পরে কঙ্কালটি পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য, যাতে নিশ্চিতভাবে ব্যক্তির পরিচয় ও মৃত্যুর কারণ জানা যায়।
সূত্র: এনডিটিভি।