Image description

পাকিস্তানে চলতি মৌসুমে টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা ১১০ ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্যমতে, এই মৌসুমী দুর্যোগে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ১১১ জন, যাদের মধ্যে ৫৩ জনই শিশু। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২১১ জন। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জনবহুল পাঞ্জাব প্রদেশে।

পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব এলাকায় ভারী বৃষ্টি, বন্যা, ভূমিধ্বস এবং প্রবল বাতাসের কারণে ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনের শেষ দিকে এক নদীর তীরে আশ্রয় নেওয়া কমপক্ষে ১৩ জন পর্যটক হঠাৎ বন্যায় ভেসে যান। পরে তাদের আর খোঁজ মেলেনি।

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও জুন-সেপ্টেম্বর সময়কালে মৌসুমী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কৃষিভিত্তিক এই অঞ্চলে বৃষ্টির এ সময়টিকে ফসল চাষ ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধরা হলেও, অতিবৃষ্টি অনেক সময় প্রাণঘাতী বিপর্যয়ের রূপ নেয়।

আবহাওয়া বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ধরনে অস্থিরতা বেড়েছে, বন্যা ও ঝড়ের তীব্রতা বেড়েছে। তবে এই জটিল পরিবর্তনের প্রভাব পুরোপুরি বুঝতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। ২৪ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এই দেশটি চরম আবহাওয়ার ধাক্কায় প্রায়ই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নজিরবিহীন মৌসুমী বন্যায় পাকিস্তানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ১,৭০০ জন। বহু এলাকা এখনও সেই ক্ষতির প্রভাব থেকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। চলতি বছর মে মাসেও প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

 

ঢাকাটাইমস