Image description
 

রাশিয়ার সাবেক পরিবহনমন্ত্রী র মৃত্যুর খবরে নতুন করে আলোচনায় এসেছে পুতিনের কঠোর শাসন এবং রুশ প্রশাসনের ভেতরের চাপা আতঙ্ক। সোমবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে জানানো হয়, স্তারোভোইতের মরদেহের পাশে একটি গ্লক পিস্তল পাওয়া গেছে—যেটি তাকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। তবে এই আত্মহত্যা আদৌ স্বাভাবিক কিনা, তা নিয়ে জোর প্রশ্ন উঠেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নর থাকাকালে নিরাপত্তা রক্ষায় অবদানের জন্য তিনি ওই পিস্তল পেয়েছিলেন। কিন্তু ২১ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে সীমান্ত প্রতিরক্ষা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। সেই প্রকল্পেই ইউক্রেনের হামলার মুখে পড়েছিল রাশিয়ার সীমান্ত।

 

এমন এক সময় এ মৃত্যু, যখন রাশিয়ায় পুতিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরোধী কণ্ঠের ওপর আবারও নেমে এসেছে দমনপীড়ন। বিরোধী দল ‘সিভিক ইনিশিয়েটিভ’কে সম্প্রতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘গোলস’ নিজ উদ্যোগেই কার্যক্রম বন্ধ করেছে তাদের এক নেতাকে কারাদণ্ডের পর।

একইসঙ্গে অর্থনীতির ক্ষেত্রেও চলছে নতুন রকমের জাতীয়করণ। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বেসরকারি বড় কোম্পানিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা রাশিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সম্পদ পুনর্বণ্টনের উদাহরণ—যার উদ্দেশ্য হলো পুতিনের প্রতি আনুগত্য নিশ্চিত করা।

 

 

স্তারোভোইতের মৃত্যু যেন একটি প্রতীক—একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা, যিনি আগে পুরস্কৃত হয়েছিলেন, পরে দুর্নীতির অভিযোগে নাম আসে, এবং এক সময় তাকেই খুঁজে পাওয়া গেল তার টেসলার পাশে মৃত অবস্থায়।

এ ঘটনাকে অনেকেই ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস পুগোর আত্মহত্যার সঙ্গে তুলনা করছেন। তবে এখনকার রাশিয়ায় তথ্য নিয়ন্ত্রণ এতো কঠোর যে সত্য উদঘাটন অনেক কঠিন।

এই মৃত্যু শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়—বরং রাশিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি। পুতিনের শাসনে, একদিকে যেমন ক্রেমলিন নিজেকে শক্তিশালী করছে, অন্যদিকে তার ঘনিষ্ঠ মহলের নিরাপত্তাও হয়ে উঠছে অনিশ্চিত।