
বিশ্ব প্রযুক্তির দুনিয়ায় নীরব বিপ্লব ঘটাল অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদিনের অপারেশন প্রধান জেফ উইলিয়ামস অবসর নিচ্ছেন, আর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অসাধারণ মেধাবী, সাবিহ খান।
মোরাদাবাদ থেকে কুপার্টিনো: একটি অনুপ্রেরণার গল্প
সাবিহ খানের জন্ম ১৯৬৬ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর পরিবার পাড়ি জমায় সিঙ্গাপুরে, এরপর যুক্তরাষ্ট্রে। যাত্রাপথে অভিজ্ঞতা আর শিক্ষা তাঁকে গড়ে তুলেছে বিশ্বমানের অপারেশন বিশেষজ্ঞ হিসেবে।
তিনি টাফটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও যান্ত্রিক প্রকৌশলে ডাবল ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (RPI) থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পেশাজীবনের শুরু জেনারেল ইলেকট্রিক প্লাস্টিকস-এ, যেখানে তিনি অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন।
৩০ বছরের অ্যাপল-যাত্রা
১৯৯৫ সালে অ্যাপলের প্রোকিওরমেন্ট গ্রুপে যোগ দেন সাবিহ। এরপর তিন দশক ধরে অ্যাপলের পরিকল্পনা, সাপ্লাই চেইন, উৎপাদন এবং লজিস্টিক্স বিভাগে নিরবচ্ছিন্নভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ২০১৯ সালে টিম কুক তাঁকে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অব অপারেশনস পদে নিয়োগ দেন।
নীরব নেতা, দৃঢ় চালক
সাবিহ খানকে খুব একটা পাবলিক ইভেন্টে দেখা যায় না। কিন্তু অ্যাপলের পেছনের চালিকা শক্তি হিসেবেই তিনি পরিচিত। কভিড-১৯ মহামারির সময় এবং মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেও অ্যাপলের গ্লোবাল সরবরাহ ব্যবস্থাকে তিনি দক্ষ হাতে সামলে রেখেছেন।
অ্যাপলের বিদায়ী সিইও জেফ উইলিয়ামস বলেন, "সাবিহ হলেন বিশ্বের সেরা অপারেশনস এক্সিকিউটিভ। ২৭ বছর ধরে আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করছি—তিনি একজন দুর্দান্ত কৌশলবিদ।"
নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন অধ্যায়
২০২৫ সালের জুলাইয়ের শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সিওও হিসেবে দায়িত্ব নেবেন সাবিহ খান। সামনে রয়েছে বিশাল চ্যালেঞ্জ: বৈশ্বিক লজিস্টিক সমস্যাগুলো, টেকসই উৎপাদনের চাপ এবং নতুন পণ্যের সময়মতো উন্মোচন। তবে প্রযুক্তির অন্দরমহলে সবাই জানেন—সাবিহ খান মানেই নির্ভরতা।
ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পদ
তাঁর পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। তবে অ্যাপলের টপ ম্যানেজমেন্টের পারিশ্রমিক কাঠামোর হিসাব অনুযায়ী (যেখানে জেফ উইলিয়ামসের শেয়ারের মূল্য ছিল প্রায় ৮২ মিলিয়ন ডলার), ধরে নেওয়া যায় সাবিহ খানও কোটি কোটি ডলারের সম্পদের মালিক।