
গুজরাট দাঙ্গা, এনআরসি, সিএএ কিংবা ওয়াকফ আইন—ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম দীর্ঘদিন ধরে নানা মুসলিম-বিরোধী বিতর্কের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু এবার এক ব্যতিক্রমী উপলক্ষ্যে আলোচনায় এলেন তিনি। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ইসলামের অন্যতম মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বার্তা দিয়েছেন মোদি। তার এই বার্তা ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রবিবার (৬ জুলাই) এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে মোদি লেখেন, “ইমাম হোসাইনের আত্মত্যাগ সত্য ও ন্যায়ের প্রতি তাঁর অবিচল অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি সত্যের পক্ষে অবিচল থেকেছেন—যা আজও আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা।”
মোদি যে অতীতে বহুবার মুসলিমদের বিরুদ্ধে নীতিগত ও রাজনৈতিক অবস্থানে ছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্টকে অনেকেই চমকপ্রদ এবং কিছুটা অন্তঃসারশূন্য বলে মনে করছেন। কেউ কেউ এটিকে মহররমকে কেন্দ্র করে মুসলিম ভোটারদের মন জয়ের কৌশল বলেও অভিহিত করছেন।
ইতিহাসবিদদের মতে, ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর আত্মত্যাগ কেবল ইসলামী ইতিহাস নয়, সমগ্র মানব সভ্যতার জন্য এক অসামান্য নৈতিক আদর্শ। ৬১ হিজরির ১০ই মুহাররম কারবালার প্রান্তরে অন্যায় ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তিনি ও তার পরিবার নির্মমভাবে শহীদ হন। কিন্তু শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আপস না করে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল ছিলেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদির এই বার্তায় দুইটি দিক স্পষ্ট—একদিকে এটি মহররম উপলক্ষে এক আন্তরিক বার্তা হতে পারে, আবার অন্যদিকে এটি মুসলিম জনগোষ্ঠীর সহানুভূতি অর্জনের কৌশলগত প্রয়াস হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, বিশেষ করে ভারতের আগামী নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।
এদিকে মুসলিম সমাজে এই বার্তায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও, অনেকেই মোদির অতীত রেকর্ডের কথা স্মরণ করে এই শ্রদ্ধার সততা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন।