
প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসেবে পরিচিত জাপান ফের কাঁপছে ভূমিকম্পের আতঙ্কে। দক্ষিণ জাপানের প্রত্যন্ত দ্বীপাঞ্চল টোকরা দ্বীপপুঞ্জ যেন রীতিমতো কম্পনের চক্রে আটকে গেছে। মাত্র ১৫ দিনেই ওই অঞ্চলে রেকর্ডসংখ্যক ৯০০টিরও বেশি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সর্বশেষ কেঁপে ওঠে ৫.৫ মাত্রায়, যা বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয়দের আতঙ্ক। মুহুর্মুহু কম্পনে প্রশ্ন উঠছে তবে কী আবারো ১১ ফিরে আসবে? আবারো জাপান জুড়ে তাণ্ডব চালাবে ভয়ঙ্কর সুনামি?
জাপানের জনগণ এখনও ভুলতে পারেনি ২০১১ সালের সেই ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প ও সুনামির কথা, যেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এর মধ্যেই এবার টোকরা দিপপুঞ্জের ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা জাপানকে। টোকরা দ্বীপমালা প্রায় ২১০০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এখানে দ্বীপের সংখ্যা ১২টি হলেও, মানুষের বসতি মাত্র সাতটিতে। যেখানে লোকসংখ্যা মাত্র ৭০০-এর মতো। তার ওপর নেই কোনো পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল, তুচ্ছ চিকিৎসার জন্যও ছুটতে হয় ৬ ঘণ্টা দূরের কাগোশিমা শহরে।
সাধারণত শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করা এই দ্বীপের বাসিন্দাদের এখন রাতের ঘুম হারাম। রাতে হঠাৎ সমুদ্র থেকে আসা রহস্যময় শব্দ, সঙ্গে ঘরের দেয়াল দুলে ওঠা সব মিলিয়ে গভীর উদ্বেগে দিন পার করছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন পর্যটকদের থাকার গেস্ট হাউসগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তর করেছে।
জাপানের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, বর্তমানে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাস নেই, যা এই ধরনের মহাবিপর্যয়ের দিকে ইঙ্গিত করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, একটানা এতগুলো কম্পন বড় ধরনের সুনামির পূর্বাভাস হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে, তাই সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হচ্ছে।
২০১১ এর ভয়াবহ সেই ভূমিকম্প আর সুনামির ক্ষত কাটিয়ে না উঠতেই জাপানে আবারো সুনামির শঙ্কায় রীতিমতো এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ জাপানীদের মনে। আর বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জাপান সরকার আশঙ্কা করছে, ভবিষ্যতে আরেকটি বড় ধরনের ভূমিকম্পে প্রাণহানি ছাড়িয়ে যেতে পারে ৩ লাখের বেশি।