
যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো আলোচনায় বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান। আগামী সপ্তাহে ইউরোপে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
শুক্রবার (০৪ জুলাই) এক্সিওজের বরাতে আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে। নরওয়েতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। পরমাণু ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
দুটি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ইসরায়েলি হামলা এবং পরবর্তীতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমা হামলার পর উত্তেজনা বৃদ্ধির পর প্রথমবারের মতো ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরিকল্পনা করছেন। সূত্রগুলো জানিয়েছে, নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এখনো বৈঠকের জন্য চূড়ান্ত তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বা ইরানের কেউই আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। অন্যদিকে ইরানের জাতিসংঘ মিশন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
এর আগে ইসরায়েলি হামলার পর ওয়াশিংটন এবং তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এই সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এ আলোচনায় সম্ভাব্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে সরাসরি ও উসকানিমূলক হামলা চালায়। এতে ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে। ইরান এ আচরণকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে আসছে।
এসব হামলার জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
এরপর দুই দেশের মধ্যে ২৪ জুন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ শেয়ার করা এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্তভাবে সম্মত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা ধরে চলবে, এরপরই যুদ্ধকে সমাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে।’
ট্রাম্প আরও জানান, প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে যোগ দেবে। মোট ২৪ ঘণ্টা পর এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বিশ্বব্যাপী সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
তিনি লেখেন, যুদ্ধবিরতির সময় দুপক্ষই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা ধরে নিচ্ছি, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলবে, যা অবশ্যই হবে। এজন্য আমি ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশকে সাহস, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অভিনন্দন জানাই।