
এক সপ্তাহের ব্যবধানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন ফুমথাম ওয়েচায়াচাই।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে থাইল্যান্ডের রাজা নতুন মন্ত্রিসভার শপথ পাঠ করান।
সেখানে ফুমথাম ওয়েচায়াচাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এছাড়া তিনি উপপ্রধানমন্ত্রীর পদও গ্রহণ করেন।
গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নৈতিকতার মানদণ্ড লঙ্ঘন করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্তের নির্দেশ দেয় দেশটির সংবিধানিক আদালত।
এতে দেশটির শীর্ষ পদে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। ক্ষমতা হস্তান্তর হয় যোগাযোগমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিতের হাতে, যিনি মাত্র এক দিন দায়িত্বে ছিলেন।
ফুমথাম সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিতের চেয়ে উচ্চ পদস্থ হওয়ায় তিনিই এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
থাই সরকার সামাজিক মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন মন্ত্রিসভা তাদের প্রথম বৈঠকে ফুমথামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
এদিকে পেতংতার্ন বরখাস্ত হওয়ার পর নতুন মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন, ফলে তিনি ক্ষমতার শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে নিজের প্রভাব ধরে রাখছেন।
থাইল্যান্ড যখন টালমাটাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা এবং ট্রাম্পের ৩৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করতে চাচ্ছে—তখন নেতৃত্বে বারবার পরিবর্তন আসছে।
ফুমথামকে পেতংতার্ন ও তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রার একজন বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৭১ বছর বয়সী ফুমথাম সত্তরের দশকের বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে "বিগ কমরেড" উপাধি পেয়েছিলেন। পরে থাকসিনের টেলিকম সাম্রাজ্যের মাধ্যমে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
পূর্ববর্তী মন্ত্রিসভাগুলোতে তিনি প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং গত বছর শীর্ষ পদে সংকট সৃষ্টি হওয়ার পর অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কিছু সময় দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মূলত কম্বোডিয়ার নেতা হুন সেনের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পরই পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবি তীব্র আকার ধারণ করে। পেতংতার্ন ওই ফোনালাপে হুন সেনকে 'চাচা' সম্বোধন এবং একজন থাই সামরিক কর্মকর্তার সমালোচনা করেছেন। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ জন্ম নেয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই দেশটির সংবিধানিক আদালত পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্তের নির্দেশ দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই তদন্ত শেষ হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।