Image description

ইরানের প্রতি অভিমান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিমান করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছিলাম, যা তেহরানের দীর্ঘদিনের একটি প্রধান দাবি।

 
 

 

 
 

তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানতাম, খামেনি কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন। আমি ইসরাইল কিংবা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীকে তার জীবন শেষ করতে দেইনি। আমি তাকে এক ভয়াবহ ও লাঞ্ছনাজনক মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছি। অথচ আমাকে ‘ধন্যবাদ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প!’ পর্যন্ত বলা হলো না। উল্টো আমি পেলাম শুধু রাগ, ঘৃণা আর বিদ্বেষপূর্ণ বার্তা। ফলে আমি সাথে সাথে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সব কাজ বন্ধ করে দিলাম।’

 
 

 

 

এ সময় তিনি ইরানকে আবারো আলোচনার টেবিলে ফেরার আহ্বান জানান।

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার হাত থেকে রক্ষা করেছেন। সেইসাথে তিনি খামেনির প্রতি অকৃতজ্ঞতার অভিযোগ এনে হুঁশিয়ারি দেন যে ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের দিকে এগোয়, তাহলে তিনি আরো বোমা হামলার নির্দেশ দেবেন।

 

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক বিস্ফোরক বার্তায় ট্রাম্প তেহরানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। কারণ ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। একইসাথে তিনি ইরানের ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কাজ বন্ধ করার ঘোষণাও দেন।

 

ট্রাম্প বলেন, যদি মার্কিন হামলার পরও ইরান পারমাণবিক অস্ত্র-মানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়, তাহলে ‘নিঃসন্দেহে’ যুক্তরাষ্ট্র আবারো ইরানকে বোমা মারবে।

 

ইসরাইলকে হারিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চড়’ মেরেছেন বলে খামেনির বক্তব্য উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এ একপ্রকার অকৃতজ্ঞতা।

 

নোটো সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু আলোচনা শুরু হবে। কিন্তু বুধবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা অস্বীকার করেন।

 

ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘একটি বিস্তৃত শান্তিচুক্তির’ আশায় তারা কাজ করছেন।

 

হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যদি সাম্প্রতিক বিমান হামলা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম বন্ধে ব্যর্থ হয়, তাহলে ‘অবশ্যই’, ‘নিঃসন্দেহে’ নতুন করে হামলা চালানো হবে।

 

তিনি আরো বলেন, ‘খামেনি ও ইরানকে আমরা ভালোভাবেই পরাস্ত করেছি। এটিই ছিল যুদ্ধ শেষ করার সেরা সময়।’

 

তিনি জানান, তিনি খামেনির বক্তব্যের জবাবে ‘একটি ছোট বিবৃতি’ দেবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, যা পরে ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টের মাধ্যমে প্রকাশ করেন।

 

সেই পোস্টে ট্রাম্প বলেন, খামেনি ‘অসত্য ও বোকামিপূর্ণ’ভাবে দাবি করেছেন যে ইরান ১২ দিনের যুদ্ধে জয়লাভ করেছে।

 

তিনি যোগ করেন, ‘একজন ধর্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে তার মিথ্যা বলা উচিত হয়নি।’

 

এই কথার লড়াই এমন এক সময়ে চলছে, যখন ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে অস্ত্রবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির পর খামেনির ভবিষ্যৎ নিয়ে গুঞ্জন ছিল।

 

বৃহস্পতিবার তিনি প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে ভাষণ দেন এবং বলেন, ইরান ‘ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিজয়’ অর্জন করেছে, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নতি স্বীকার করবে না এবং ওয়াশিংটনকে ‘চপেটাঘাত’ করা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট অস্বাভাবিকভাবে ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত করেছেন। এটি প্রমাণ করে, তিনি নিজেই এমন অতিরঞ্জনের প্রয়োজন অনুভব করেছেন।’

 

তিনি ট্রাম্পের সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন, যেখানে বলা হয়েছিল মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘দশক পেছনে’ গেছে।