Image description

ইরানের মানবাধিকারকর্মী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী নার্গিস মোহাম্মদি ও শিরিন এবাদি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। গণতন্ত্র এবং নারী, শিশু ও শরণার্থী অধিকার রক্ষায় অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান শিরিন এবাদি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে নারী অধিকার এবং মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ২০২৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া নার্গিস মোহাম্মদি তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দি।

সম্প্রতি ইরান সরকারের নেতৃত্ব পরিবর্তনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। বিষয়টি আলোচনার মধ্যে গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইরানে ক্ষমতার পালাবদলের আভাস দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে নোবেলজয়ী এ দুই ইরানির বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

নার্গিস মোহাম্মদি এবং শিরিন এবাদি সম্প্রতি ইসরায়েল-ইরানের চলমান যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। নোবেল উইমেনস ইনিশিয়েটিভ ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন, ধ্বংসের বদলে সংলাপের পথ বেছে নিন।’ ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের শুরু করা এই যুদ্ধ এরই মধ্যে বিপুল মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে এবং এটি বৃহত্তর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংঘাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে। নারী ও শিশুসহ নিরীহ বেসামরিক নাগরিকরা প্রাণ হারাচ্ছেন।’

বিবৃতিতে শিরিন এবাদি ও নাগরিক সমাজের কর্মীরা যুদ্ধ থামিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করা, ইরান ও ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করা এবং পারস্পরিক অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শনের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প বলেন, ‘শাসকবদল শব্দটা ব্যবহার করা রাজনৈতিকভাবে ঠিক হবে না। কিন্তু যদি ইরানের বর্তমান শাসক সে দেশকে শ্রেষ্ঠত্বের পর্যায়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়, তাহলে কেন শাসকবদল হবে না?’ অন্যদিকে জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সম্প্রতি ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ জানান, ইসরায়েলের মূল উদ্দেশ্য, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা। এ জন্যই পদক্ষেপ নিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে তেহরানে ক্ষমতার পালাবদলে সক্রিয় হওয়ার জন্য ইরানের আমজনতার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন।

নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরানের মানুষই চায় দেশটির অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে কেউ তাদের মুক্ত করুক। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ রিপাবলিকানে এক প্রতিবেদনে মানবাধিকারকর্মী আদ্রিয়ানা মাহশা ভারকিয়ানি জানান, এমন মিথ্যা আশা পশ্চিমা বিশ্ব আগেও দিয়েছে। তার মতে, আফগানিস্তানেও নারী স্বাধীনতার অজুহাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা কী, তা গোটা বিশ্ব জানে। ইরানের মানুষও নিজ দেশে বোমাবর্ষণের মাধ্যমে স্বাধীনতা আদায় করতে চায়, এমন ভাবনা অবাস্তব।