
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, রাস্তা দাবি আদায়ের স্থান হতে পারে না। মঙ্গলবার ডিএমপি অডিটোরিয়ামে ‘রোড সেফটি পোস্টার অ্যান্ড স্লোগান কনটেস্ট-২০২৫’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ইতোমধ্যে অনুরোধ করেছি রাস্তায় যেন সভা সমাবেশ না করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানাবো। এ বিষয়ে দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি সকল নাগরিকের কাছে আহ্বান জানাবো; আপনাদের যার যা দাবি দাওয়া আছে; সকল দাবি দাওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকে বসুন। রাস্তা অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবেন না।
পাঁচজন শিক্ষার্থী যে কোনো ইস্যুতে রাস্তায় নেমে অবরোধ করে বসে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সকল দায়-দায়িত্ব ডিএমপি কমিশনারের উপর অর্পণ করা ঠিক নয়। আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশাসন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভেতর রাখার চেষ্টা করুন। তাদের কথা শুনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন।
জাপানি সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় ঢাকা রোড ট্রাফিক প্রজেক্ট-এর অধীনে রোড সেফটি ইস্যুতে সমন্বিতভাবে কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন বিআরটিএ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।
অনুষ্ঠানের রোড সেফটি ইস্যুতে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ও স্লোগান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় পোস্টার বিভাগে রাজধানীর রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রে নাগরিকদের সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের পোস্টার তৈরি করেন। এ বিপদ থেকে শ্রেষ্ঠ ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। অন্যদিকে স্লোগান বিভাগে শ্রেষ্ঠ স্লোগান উদ্ভাবনকারী বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাইকার বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রধান তমোহিদি ইচিগুছি, নিপ্পন সিগন্যাল বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আকিফুমি ইওসিদা, জাপানি কোম্পানি হোন্ডার বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সুসুমু মরিসাওয়া, জেট মেম্বার ইওসিহিসা আসাদা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার।
অনুষ্ঠানে ঢাকা ডি সিটি কর্পোরেশন ডিটিসিএ বিআরটিএ বিআরটিসি এবং ডিআরএসপি প্রকল্পের প্রতিনিধিসহ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএমপি কমিশনার এবং অন্যান্য অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। পুরস্কার বিতরণের পর অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ী ২০ জন শিক্ষার্থীর ফটোসেশন হয়।
ডিএমপি কমিশনার আমন্ত্রিত জাইকার প্রতিনিধিদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাপান বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে কিছু কার্যক্রমে প্রমাণ করেছে। জাইকা সব সময়ের মতো বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাজধানীতে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি হচ্ছে কিন্তু কি কারণে পুলিশ পদক্ষেপ নিচ্ছে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মোহাম্মদপুরে কিছুদিন আগে চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসায় মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরকম অভিযোগ থাকলে অবশ্যই পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।
মব জাস্টিস নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু শাস্তিমূলক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কারণে ২-৩ মাস আগের চাইতে মব অনেক কমে গেছে। মব নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গাফিলতির কারণে কয়েকজন অফিসারের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।