Image description

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সোমবার (২৩ জুন) তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচিকে মস্কো পাঠিয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছ থেকে আরও সহায়তা চাওয়ার জন্যই তাকে মস্কো পাঠিয়েছেন খামেনি। ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযানের পর পুতিনের প্রতি এমন আহ্বান জানালেন খামেনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছেন।  

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েল প্রকাশ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা ও তার ‘শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের’ ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাদের এমন পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যকে এক গভীর সংকটে ফেলতে পারে বলে  আশঙ্কা করেছে রাশিয়া।

পুতিন ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানালেও, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলা নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তিনি গত সপ্তাহে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়ে মস্কোর পক্ষ থেকে ইরানের পরমাণু ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন।

রয়টার্সকে এক শীর্ষ সূত্র জানায়, ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি পুতিনের কাছে খামেনির একটি চিঠি পৌঁছে দেবেন এবং সেখানে রুশ সমর্থনের অনুরোধ থাকবে।

ইরানের কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সহায়তায় তেহরান সন্তুষ্ট নয়। ইরান চায় পুতিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও সক্রিয়ভাবে তাদের পাশে দাঁড়াক। তবে ইরান কী ধরনের সহায়তা চাচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন আরাঘচিকে গ্রহণ করবেন। তবে আলোচনায় কী থাকবে তা জানায়নি।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস আরাঘচির উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে ইরান ও রাশিয়া নিজেদের অবস্থান ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছে।

পুতিন বারবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং বলেছেন, ইরান যাতে বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির সুবিধা ভোগ করতে পারে, তা নিশ্চিত করে এই সংকট সমাধানে মস্কোর কিছু প্রস্তাব তিনি ওয়াশিংটন ও তেহরানকে জানিয়েছেন।

তবে পুতিন গত সপ্তাহে স্পষ্টভাবে এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল খামেনিকে হত্যা করতে পারে কিনা।

তিনি বলেন, ইসরায়েল মস্কোকে আশ্বস্ত করেছে যে বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যেসব রুশ বিশেষজ্ঞ দুটি নতুন চুল্লি নির্মাণে সহায়তা করছেন, তারা ইসরায়েলি বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

ইরানের দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভেটোক্ষমতাসম্পন্ন সদস্য এবং সেই পরমাণু চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ— যেটি ট্রাম্প ২০১৮ সালে তার প্রথম প্রেসিডেন্সির সময় বাতিল করেছিলেন।

তবে ইউক্রেনে টানা চতুর্থ বছরের মতো যুদ্ধে লিপ্ত পুতিন এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ইরানের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনও সংঘাতে জড়াতে আগ্রহ দেখাননি— বিশেষত যখন ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করার চেষ্টা করছেন।