
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এরপর খামেনি প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানান। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লেখেন, ‘মর্যাদাবান হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো।’
‘হায়দার’ হলেন হজরত আলী (রা.), যিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা এবং শিয়া মুসলিমদের কাছে প্রথম ইমাম। এই বার্তায় খামেনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।
ট্রাম্প এক পোস্টে বলেন, ‘আমরা জানি তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা কোথায় আছেন। তিনি সহজ লক্ষ্যবস্তু। আমরা এখনই তাকে হত্যা করব না, তবে করব।’
এই মন্তব্য শুধু হুমকি নয়, বরং একটি সম্ভাব্য যুদ্ধের ইঙ্গিতও। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে। ফরদোসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এই হামলার লক্ষ্য হতে পারে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি ইরানের সবচেয়ে বড় নেতা। তিনি ১৯৮৯ সাল থেকে দেশ শাসন করছেন। তার অধীনে রয়েছে সেনাবাহিনী, আদালত, সরকার, বিপ্লবী গার্ড ও কুদস ফোর্স। এই কুদস ফোর্স হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুথিদের সহায়তা দিয়ে থাকে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এরপর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েল হিজবুল্লাহর ওপর আক্রমণ করে এবং ইরানের সামরিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়।
সম্প্রতি ইসরায়েলের এক হামলায় ইরানের বহু বিজ্ঞানী ও সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সাধারণ মানুষও মারা যায়। এসব ঘটনার পর খামেনির নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ে।
এই সময় ইরান তার মিত্রদের কাছ থেকে তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছে না। হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুথিরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। আর মধ্যপ্রাচ্যের বড় দেশগুলো শুধু বিবৃতি দিচ্ছে, কিন্তু কাজ করছে না।
চীন ও রাশিয়া শুধু নিন্দা জানিয়েছে। তারা ইসরায়েলকে থামাতে কোনো কঠিন পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি রাশিয়া যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েছিল, তা ধ্বংস করার পরও কোনো সহায়তা করেনি।
এখন ইরান একা। তার পাশে কেউ নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল মিলে ৮৬ বছর বয়সী খামেনিকে টার্গেট করেছে।
এই ঘটনা শুধু একজন বৃদ্ধ নেতাকে হত্যা করার চেষ্টাই নয়, বরং এটি একটি দেশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক অবস্থানের ওপর সরাসরি আক্রমণ বলে চিহ্নিত হচ্ছে।