বাইডেন প্রশাসন একদিকে হামাসকে যুদ্ধবিরতিতে চাপ দিচ্ছে, অন্যদিকে ইসরাইলের কাছে বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করছে। মার্কিন প্রশাসনের এই দ্বৈত অবস্থানের মধ্যেই গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। গেল একদিনে গাজায় নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলায় অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরাইলের হামলায় গাজার প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) গাজাজুড়ে ৩০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে কমপক্ষে ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হযেছেন। চিকিৎসক ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে।
ইসরাইলি হামলায় গাজা শহরের ভবনগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভয়াবহ এই ধ্বংসযজ্ঞে লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তরের ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। টেলিগ্রামে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের সামরিক হামলায় কামাল আদওয়ান হাসপাতাল সব রোগী ও কর্মীকে সরিয়ে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা না পেয়ে কাতরাচ্ছেন আহতরা।
এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চাপ দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। শুক্রবার হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন চুক্তিতে সই করতে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে হামাসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ চুক্তিতে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
কারবি আরও বলেন, কাতারের দোহায় হামাস ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। এ আলোচনা চালিয়ে যেতে ইসরাইলের পক্ষ থেকে দোহায় আরেকটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হচ্ছে। হোয়াইট হাউজ ইসরাইলের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে বাইডেন প্রশাসন একদিকে যেমন হামাসকে চাপ দিচ্ছে, অন্যদিকে আবার ইসরাইলকে অস্ত্র বিক্রির বিষয়টিও চূড়ান্ত করছে।
গাজায় ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা উপেক্ষা করে ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ইসরাইলের কাছে ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জো বাইডেন প্রশাসন অনানুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে বিষয়টি জানিয়েছে।
দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করেছে, তার মধ্যে যুদ্ধবিমান এবং শত্রুকে আক্রমণ করতে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারের সামরিক রসদ রয়েছে। এছাড়া গোলা ও যুদ্ধবিমানের জন্য আকাশেই নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র তালিকায় রয়েছে।
তবে ইসরাইলের কাছে এসব অস্ত্র বিক্রি করতে হলে আগে বাইডেন প্রশাসনের এই প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অনুমোদন পেতে হবে।