
কয়েকদিন আগেই বলিউডের তারকা অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুর মারা যান। মৃত্যু চিরন্তন সত্য হলেও হইচই ফেলে দেয় দিল্লির ব্যবসায়ী সঞ্জয়ের মৃত্যু। জানা যায়, ইংল্যান্ডে পোলো খেলার সময় হঠাৎ করেই সঞ্জয়ের মুখে মাছি ঢুকে পড়ে। যা এক সময় গলায় ঢুকে যায়।
ব্যবসায়ীর সহকর্মী সুহেল শেঠ জানিয়েছেন, সঞ্জয় মাছিটা গলা থেকে বের করার চেষ্টা না করে ভুলবশত গিলে ফেলে। এরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। যদিও তার চিকিৎসা শুরু হয়েছিল, কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাকে। আর তার মৃত্যুর পরই আলোচনার তুঙ্গে উঠে― মাছি বা মৌমাছি মুখে গেলে কিংবা গিলে ফেলার সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা? এ কারণে সত্যিই মৃত্যু হয় কিনা?
এ নিয়ে যখন নানা সংশয়, তখন বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তাপস রায় চৌধুরী। এ চিকিৎসক বলেন, এ ব্যাপারে সংশয় রাখার কোনো জায়গা নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে।
তাপস রায় জানিয়েছেন, সঞ্জয় তখন পোলো খেলছিলেন। অর্থাৎ, ওই সময় শারীরিকভাবে ক্লান্ত ছিলেন তিনি। তখন নাক-মুখ দিয়েই নিশ্বাস নিতে হয়। সেই সময় কোনো মাছি যদি মুখে বা মুখে থেকে গলায় প্রবেশ করে, তাহলে তা অনেক গভীরে চলে যেতে পারে। এ অবস্থায় কাশি শুরু হয়। তবে সবসময় মাছি বের হতে চায় না। এ কারণে মিউকাস মেমব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা থেকে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
এছাড়া অন্য মৌমাছির হুলের জন্য প্রদাহ হতে পারে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের ভাষ্য, করোনারি রক্তনালির সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে, এমনকি হার্ট অ্যাটাকের কারণও ঘটাতে পারে। মৌমাছির বিষ অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এ থেকে প্রদাহ সৃষ্টিকারী পদার্থ নিঃসরণ হয়ে ধমনীগুলো সংকুচিত করে। যাকে বলা হয় ‘কুনিস সিনড্রোম।’ এভাবে মৃত্যু হতে পারে সঞ্জয়ের।
এদিকে হার্টের চিকিৎসক কুণাল সরকার গলায় মাছি ঢুকে যাওয়ার ব্যাপারে হার্ট অ্যাটাকের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই বলে মনে করেন। তার ভাষ্যমতে―সঞ্জয়ের ঘটনাটি শুনেছি আমি। তবে এমনটা হওয়া আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে আমার। যদিও হয়, তাহলে সেটি বিরল। যা আমার জানা নেই।
এ পরিস্থিতিতে বাঁচার উপায় রয়েছে কি:
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এ অবস্থায় বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে মুখে প্রবেশ করা মাছি বের করে ফেলা। যদিও এ ধরনের ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যায়। এ কারণে অনেক সময় কাশি বা বিষম খেয়েও সুস্থ হওয়া যায় না। এ জন্য মুখে কিছু প্রবেশ করলে তা তাৎক্ষণিক বের করে ফেলাই উত্তম।