Image description

দখলদার ইসরায়েল বিগত দুই বছর যাবৎ ফিলিস্তিনের গাজায় নিরীহ মুসলমানদের ওপর আগ্রাসন চালালেও ইসরায়েলের সাথে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোন দেশ সংঘাতে জড়ায়নি। কিন্তু ইসরায়েল এবার যেনো ভিমরুলের চাকে হানা দিয়েছে, আগ বাড়িয়ে হামলা চালিয়েছে ইরানে। এতেই ক্ষেপে গিয়ে এখন ইসরায়েলে মুহুর্মুহু হামলা চালাচ্ছে ইরান। যে হামলার রেশে পালাতে বাধ্য হয়েছে স্বয়ং ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরান তাদের হামলায় প্রতিনিয়ত যোগ করছে নতুন নতুন সব প্রযুক্তি আর ড্রোন। এবার তারা সামনে এনেছে ‘শাহেদ-১০৭’ নামের আত্মঘাতি ড্রোন। যা দিয়ে এখন কাবু করছে নেতানিয়াহুর অহংকার আয়রন ডোমকেও।

 

ইরানের সামরিক প্রযুক্তিতে নতুন সংযোজন ‘শাহেদ-১০৭’ একটি উন্নতমানের সুইসাইড ড্রোন, যার প্রতি ইউনিটের দাম প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা। ইরান এর আগেও শাহেদ-১৩১ ও ১৩৬ মডেলের ড্রোনের জন্য আলোচনায় ছিল। কিন্তু শাহেদ-১০৭ এক ধাপে উন্নত প্রযুক্তির সুইসাইড ড্রোন যা শুধু বিস্ফোরক বহনই নয় বরং গোপনে নজরদারি করা, লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ঘোরাফেরা করা এবং নিখুঁত আঘাত করার জন্যও একটা মাস্টার পিস।

 

 

শাহেদ-১০৭ ড্রোনটি মূলত পিস্টন ইঞ্জিনচালিত। এতে রয়েছে আধুনিক জিপিএস ও ইনফ্রারেড গাইডেন্স সিস্টেম। এটি শত্রুর অবস্থান চিনে ঘোরাঘুরি করতে পারে এবং নির্দিষ্ট সময়ে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। শাহেদ-১০৭ এ রয়েছে লাইভ রিকনিসান্স ক্যামেরা, যা রিয়েল টাইমে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে ও তা কেন্দ্র করে ফাইনাল হামলা পরিচালনা করে থাকে। এই ড্রোনের ২০-৫০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করার ক্ষমতা রয়েছে। যার ফলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতের সময় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়।

 

শাহেদ-১০৭ ড্রোন একটানা ১৫০০ কিমি পর্যন্ত উড়তে পারে। এর সর্বোচ্চ গতি ২৫০-৩০০ কিমি প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ড্রোনটি মূলত নির্মিত হয়েছে কম্পোজিট ও স্টিলথ ধাঁচে। লক্ষ্যবস্তুর কাছে ধরা না পড়ে এটি আঘাত হানতে সক্ষম।

 

যদিও শাহেদ-১৩৬ বা ১৩১ ড্রোনের চেয়ে তুলনামূলক শাহেদ-১০৭ এর দাম বেশি। এর দাম প্রায় ১০ গুণ বেশি। উন্নত প্রযুক্তি, হাই-রেজোলিউশন ক্যামেরা, ইলেকট্রনিক জ্যামিং প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং নিখুঁত গাইডেন্স এই ড্রোনকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল করে তুলেছে বলেই দাবি নির্মাতাদের।

 

শাহেদ-১০৭ ড্রোনটি ইরান ছাড়াও ব্যবহার করছে রাশিয়া। যদিও প্রকাশ্যে কখনো এটি নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি রাশিয়াকে। কিন্তু, ইউক্রেনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে হামলায় এই ড্রোন ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।

 

এদিকে ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে ইসরায়েলও এই ড্রোনকে হুমকি হিসেবে দেখছে। সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি ইরান এমন ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়, তবে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। পাল্টা হুমকি হিসেবে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনিকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন।