Image description

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ সহায়তায় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরানে। লক্ষ্য—ইরানকে সামরিক ও কৌশলগতভাবে পঙ্গু করে ফেলা।

যদিও ইসরায়েলের পাশে পশ্চিমা বিশ্বের নিরব সমর্থন রয়েছে, তবু ইরানের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো এখন ধীরে ধীরে সরব হতে শুরু করেছে। এই তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে পাকিস্তান ও চীন।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ শনিবার দেশটির জাতীয় পরিষদে এক ভাষণে বলেন— “আমরা ইরানের পাশে আছি এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমর্থন জানাবো। যদি মুসলিম দেশগুলো এখন ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে একে একে সবাইকে একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েল কেবল ইরান নয়, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনকেও বারবার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

শুক্রবার রাতে ইসরায়েল ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ নামের একটি অভিযান চালায় ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বড় আটটি শহরে। এই আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন— “ইসরায়েল ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর সরাসরি আঘাত করেছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি এবং সংঘাতের পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।”

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ফোনে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির সঙ্গে কথা বলেন এবং ইসরায়েলের আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান। একই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি তোলার প্রতিশ্রুতি দেন।

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম নেতৃত্বে বরাবরই সরব থাকা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবারও তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে ফোনালাপে তিনি বলেন— “নেতানিয়াহু তার বর্বরতার মাধ্যমে পুরো অঞ্চলকে অগ্নিগর্ভ করে তুলছেন। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

ইসরায়েলের হামলার পর ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার— এসব দেশ একযোগে তীব্র নিন্দা জানায়। তারা ইরানের বিরুদ্ধে হামলাকে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করে।

এদিকে ইরানের পাল্টা হামলার পরপরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্প-কে কড়া বার্তা দেন। একই সঙ্গে তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনায় ফেরার ইঙ্গিতও দেন।