
ইসরাইলি হামলার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার ইরানকে চুক্তি করতে বলেছেন। চুক্তি না করলে ইসরাইলের ‘আরও নৃশংস’ হামলার মুখোমুখি হতে বলেছেন।ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ইরানের প্রতিশোধের বিরুদ্ধে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্রকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করছে।
একই সঙ্গে ট্রাম্প তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছেন। কারণ, প্রথম মেয়াদে ‘কোনো যুদ্ধ হয়নি’ বলে গর্ব করা এই প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এড়াতে পারেননি।
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা এএফপি’কে জানিয়েছেন, শুক্রবার ট্রাম্প ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কথা বলেছেন।
তিনি এর আগে বলেছিলেন, ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলার বিষয়ে ইসরাইল তাকে আগেই জানিয়েছিল।
ওয়াশিংটনের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে দুই মার্কিন কর্মকর্তা এএফপি’কে জানিয়েছেন, শুক্রবার ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ছোড়া ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সহায়তা করছে।
এদিকে ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তারা উভয়েই সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি সৌদি ও কাতারের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।
রিপাবলিকানরা যখন ইরান-ইসরাইল সংকট নিয়ে কাজ করছে, তখন ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। এ সময় একজন সহকারী একটি কালো-সাদা ছবি পোস্ট করেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে, একজন বিষণ্ন মুখ, মুখভঙ্গুর ট্রাম্প পশ্চিম উইংয়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
কিন্তু বৈঠক ও কূটনৈতিক আহ্বানের ঝড় ওঠে যখন ট্রাম্প ইসরাইলকে সমর্থন ও ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তখন তিনি শক্ত হাতে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে আক্রমণ বন্ধ করার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই ইসরাইল ইরানে হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউস সাউথ লনে আইন প্রণেতাদের জন্য পিকনিকের আয়োজন করার সময় প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণ ঘটে।
ট্রাম্প শুক্রবার তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বলেছেন, ‘ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের অবসান ঘটানোর জন্য এখনো সময় আছে।
তিনি বলেছেন, ‘ইরানকে অবশ্যই একটি চুক্তি করতে হবে। খুব বেশি দেরি হওয়ার আগেই কিছুই অবশিষ্ট না রেখে আগেই শুধু এটি করা উচিৎ’।
ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, তিনি ‘ইরানকে একটি চুক্তি করার জন্য সুযোগের পর সুযোগ দিয়েছেন।’
কিন্তু পরে মার্কিন গণমাধ্যমের সঙ্গে ও একাধিক ফোনালাপে তিনি ইসরাইলের ‘চমৎকার’ হামলাকে সমর্থন করা এবং আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানানোর মধ্যে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি এনবিসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইরানের দ্বিতীয় সুযোগের সম্ভাবনার ওপর জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘তারা একটি চুক্তি করার সুযোগ হাতছাড়া করেছে। এখন তাদের আরেকটি সুযোগ থাকতে পারে। দেখা যাক।’