
ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরের চলমান অস্থিরতার কারণে প্রধান প্রধান এয়ারলাইন্স এখনো তেল আবিবে ফ্লাইট চালু করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
শনিবার ইসরাইলি গণমাধ্যম এ খবর নিশ্চিত করেছে।
দখলদার দেশটির গণমাধ্যম স্বীকার করেছে যে, হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির কারণে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল এখনো ব্যাহত রয়েছে এবং প্রধান এয়ারলাইন্সগুলো তেল আবিবমুখী ফ্লাইট এড়িয়ে যাচ্ছে।
ইয়েমেনের আল-মাসিরাহ নেটওয়ার্কের তথ্যমতে, ইসরাইলের একটি অর্থনৈতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জায়োনিস্ট সরকারের বিমান চলাচল খাত এখনো গুরুতর সংকটে রয়েছে। সীমিত কিছু ফ্লাইট পুনরায় চালু হলেও স্বাভাবিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।
প্রতিবেদনটি বলছে, একাধিক প্রধান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স এখনো বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু থেকে বিরত রয়েছে এবং তাদের পুনরায় ফিরে আসার তারিখ অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেছে। এ বিলম্ব আরও দীর্ঘ হতে পারে বলেও প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ইয়েমেনি বাহিনীর অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে এই অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মকালীন অতিরিক্ত চাহিদা এবং সরবরাহে ঘাটতির কারণে টিকিটের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।
এদিকে গাজায় ঈদের আগে পরেও ইসরাইলি বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে।
গাজা উপত্যকায় এবারের ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে ৬ জুন। তার পরের দিন ৭ জুন ইসরাইলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে উপত্যকাজুড়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১০০ জন।
রোববার গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগসূত্রে আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
অন্যদিকে গাজায় বোমাবর্ষণে ধ্বংসস্তুপ থেকে কয়েক ডজন দেহ বের করে এনেছেন হাসপাতাল কর্মীরা। এটিকে গণহত্যা বলছেন অনেকেই।
নিহতদের মধ্যে ১৬ জন একই পরিবারের সদস্য। এই ১৬ জনের মধ্যে ৬ শিশুও রয়েছে। পরিবারটি বসবাস করত গাজার প্রধান ও মধ্যাঞ্চলীয় শহর গাজা সিটির সাবরা এলাকায়।
এর আগে ঈদের দিন, অর্থাৎ ৬ জুনও দিনভর গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় গোলাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। তাতে নিহত হন অন্তত ৪২ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, টানা ২০ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪,৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২৫,৬৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস তাদের মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এরও বেশি বলে উল্লেখ করেছে। জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই ইয়েমেনিরা ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি তাদের প্রকাশ্য সমর্থন ঘোষণা করেছে।
ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ (হুথি) বাহিনী স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের সংগ্রামের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং একাধিকবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়েছে।
হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি নেতারা বারবার ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের এ ধরনের হামলা গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের জবাবে এবং গাজাবাসীদের প্রতি সংহতির অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এটি বৃহত্তর আঞ্চলিক প্রতিরোধ কৌশলের অংশ।সূত্র: মেহের নিউজ