Image description

বিরল মাটির উপাদান রপ্তানির উপর চীনা সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু ইউরোপীয় কোম্পানি স্মার্টফোন এবং বৈদ্যুতিক যানবাহন তৈরি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। ৪ এপ্রিল বেইজিং কর্তৃক ঘোষিত পদক্ষেপগুলোকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক শুল্ক’ এর প্রতিশোধ হিসেবে দেখা হয়েছিল, কিন্তু ইউরোপীয় শিল্পোদ্যোগীরা এখন উদ্বিগ্ন যে, তারা ‘ক্রসফায়ারের’ মধ্যে আটকা পড়ছে।

চীনের ইইউ চেম্বার অফ কমার্স চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। সংস্থার মহাসচিব অ্যাডাম ডানেট সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেছেন, বেইজিং থেকে অনেক হাই-টেক পণ্যের জন্য অত্যাবশ্যক খনিজ পদার্থ রপ্তানি করা হয়। ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ইউরোপীয় ব্যবসায়িক সংস্থার ভাইস-চেয়ারম্যান ডানেট বলেন, ‘হাজার হাজার আবেদন পর্যালোচনা করা প্রয়োজন, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সম্পদ সীমিত। গত সপ্তাহে কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদন মিলেছে , কিন্তু কিছু কোম্পানি ডজন ডজন আবেদন জমা দিয়েছে... কিছু কোম্পানিকে উৎপাদন বন্ধ করতে হয়েছে।’

বিরল মাটিতে ১৭টি খনিজ মৌল রয়েছে। ৪ এপ্রিল, বেইজিং তাদের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় এর মধ্যে সাতটি -ডিসপ্রোসিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, লুটেটিয়াম, সামারিয়াম, স্ক্যান্ডিয়াম, টারবিয়াম এবং ইট্রিয়ামকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ট্রাম্প ‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করার ঠিক দুই দিন পর। 

ডানেটের কথায়, ‘যদি চীনা কোম্পানিগুলো এগুলো রপ্তানি করতে চায়, তবে তাদের লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি কিছু আবেদনকারীর কাছে এমন সংবেদনশীল তথ্য চাওয়া হতে পারে যার জন্য তাদের বৌদ্ধিক সম্পত্তির সাথে আপস করতে হতে পারে, কিন্তু তারা তা হস্তান্তর করতে অনিচ্ছুক। তবে অনুমোদন পেতে হলে তাদের তা করতে হবে।’

ইউরোপীয় শিল্প জুড়ে উদ্বেগের ঝড় ওঠার পর সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইইউ চেম্বার অফ কমার্স  চীনা কর্তৃপক্ষের সাথে ‘জরুরি বৈঠক’ করেছে।সাম্প্রতিককালে ইইউ চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিক ডিমার্চ জমা দিয়েছে, যদিও মঙ্গলবার প্যারিসে উভয় পক্ষের নিজ নিজ বাণিজ্য প্রধানদের মধ্যে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসি) বৈঠকের ফাঁকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন্টাও ইইউ বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিচের সাথে দেখা করেন

বৈঠকের পর ইইউর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তারা ইইউ শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর একটি বিস্তৃত পরিসরের উপর গভীর আলোচনা করেছেন। আমরা জুলাইয়ে ইইউ-চীন শীর্ষ সম্মেলনের আগে বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতি অর্জনের জন্য উভয় পক্ষের বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা চালাচ্ছি।’

ইতিমধ্যেই জার্মানির বৃহত্তম গাড়ি লবি গ্রুপ সতর্ক করে দিয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলোর ফলে উৎপাদন বিলম্ব এবং বিভ্রাট হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার চুক্তিতে ‘ধীরগতিতে’ পদক্ষেপ নেয়ার কারণে অভিযুক্ত করেছে।