
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। এই প্রেক্ষাপটে, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিশেষ নিরাপত্তায় চোখ পরীক্ষার জন্য দিল্লি রাজস্থান বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ত্যাগের পর এইটি তার দ্বিতীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সম্প্রতি ভারতের কোনো বিমানবন্দরে চোখের পরীক্ষার জন্য শেখ হাসিনার আগমনের দৃশ্যের নয়, বরং এটি ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লিতে পৌঁছানোর দৃশ্য
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘India File ANI’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর প্রকাশিত ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওর ৪৯ সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল লক্ষ্য করা যায়। ভিডিওটির বর্ণনা অনুযায়ী, এটি বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লিতে পৌঁছানোর দৃশ্য।
এ ছাড়া, ভারতীয় নিউজ চ্যানেল ‘ডব্লিউআইওএন’-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে একই দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওটির বর্ণনা অনুযায়ী, শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চার দিনের সফরে ভারতে গিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে, ডয়চে ভেলেতে প্রকাশিত একই দিনের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনা চার দিনের ভারত সফরের অংশ হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শীর্ষ পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা।
এ ছাড়াও, সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভারতে চোখের চিকিৎসা করানো বা জনসম্মুখে আসার তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, দিল্লিতে ‘রাজস্থান বিমানবন্দর’ নামে কোনো বিমানবন্দর নেই; কারণ রাজস্থান ভারতের একটি রাজ্যের নাম।
সুতরাং, ২০১৯ সালের একটি ভিডিওকে সম্প্রতি ভারতের দিল্লির একটি বিমানবন্দরে চোখের পরীক্ষার জন্য শেখ হাসিনার পৌঁছানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা