Image description

ব্রিটেনে ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ লর্ডসের সদস্য ও দেশটির প্রথম মুসলিম নারী মন্ত্রী সাঈদা ওয়ারসি। তাঁর মতে, দেশের রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম অঙ্গনে যেসব “বিপজ্জনক বর্ণনা” ঘুরে বেড়াচ্ছে, তা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন আরও বাড়িয়ে তুলছে।

বৃহস্পতিবার ওয়েলসের হে সাহিত্য ও শিল্প উৎসবে অংশগ্রহণকালে দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাঈদা ওয়ারসি বলেন, “ব্রিটেনে মুসলিমদের যে আচরণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তা অনেকটাই ১৯৩০-এর দশকের ইউরোপে ইহুদিদের সঙ্গে হওয়া আচরণের মতো।”

তিনি বলেন, “আমার হৃদয় ভেঙে যায়, যখন দেখি মুসলিমদের জনপরিসরে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আপনি যতবার এই দেশকে সেবা দেন, দায়িত্ব পালন করেন— তারপরও আপনাকে বিশ্বাস করা হয় না।”

সাক্ষাৎকারে এক পর্যায়ে তিনি ব্যক্তিগত আশঙ্কার কথাও প্রকাশ করেন। জানান, মুসলিম পরিচয় থাকার কারণে যুক্তরাজ্য ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার বিষয়েও তাঁর ও তাঁর স্বামীর মধ্যে আলাপ হয়েছে। ওয়ারসি বলেন, “আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমাদের কি আশেপাশের অনেকের মতোই বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে? অন্য কোনো পথে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে?”

সাঈদা ওয়ারসি জানান, মুসলিমদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বক্তব্য সাধারণ মানুষের ভেতর থেকে নয়, বরং সেগুলো ছড়াচ্ছে রাজনীতিক ও গণমাধ্যম।

তিনি বলেন, “এটা কোনো সাধারণ মানুষের কথা নয়। এটা আসে ক্ষমতাবানদের কাছ থেকে— যাদের হাতে রয়েছে বড় বড় প্ল্যাটফর্ম। তারাই বারবার বলে, মুসলিমদের বিশ্বাস করা যায় না। তারা বিপজ্জনক, সহিংস। মুসলিম পুরুষরা যৌন হয়রানিকারী, আর নারীরা চিরকাল বশ্যতাপূর্ণ।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মুসলিমদের নিয়ে এই স্টেরিওটাইপগুলো বারবার প্রকাশিত হওয়াই সমাজে বিদ্বেষের চেহারা তৈরি করছে। এটি জনপরিসরের ভাষাকে বিষাক্ত করে তুলছে এবং মুসলিমদের বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে।”

সাঈদা ওয়ারসি এ সময় ব্রিটিশ জনগণকে এই বিভাজনমূলক বয়ান প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানান এবং ঐক্য ও সংহতির সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

সূত্র: আল জাজিরা