দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং এর লঙ্ঘন মোকাবিলার ক্ষেত্রে সমস্ত দায়-দায়িত্ব লেবানন সরকারের বলে জোর দিয়েছেন হিজবুল্লাহ মহাসচিব নাইম কাসেম।
বুধবার তেহরানে একটি সম্মেলনে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
হিজবুল্লাহ প্রধান বলেন, লেবানন সরকার যেহেতু চুক্তিটি আলোচনার মাধ্যমে করেছে, তাই চুক্তি লঙ্ঘন বন্ধ করার দায়ভারও তাদের ওপর বর্তায়।
নাইম কাসেম এ সময় ইসরাইলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর সাম্প্রতিক সংঘাতের ক্ষেত্রে তিনটি পর্যায়ের বিবরণ দেন।
প্রথম পর্যায়: অবরুদ্ধ গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেওয়া।
দ্বিতীয় পর্যায়: ইসরাইলের ব্যাপক বোমাবর্ষণ।
তৃতীয় পর্যায়: ২৭ নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী সময়।
তিনি উল্লেখ করেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলকে তার আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং দখলকৃত লেবাননের অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে। হিজবুল্লাহও দক্ষিণ লিতানি নদীর দক্ষিণ থেকে তাদের যোদ্ধা এবং অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
নাইম কাসেম এ সময় বলেন, ‘লেবানন সরকারই যেহেতু এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তাই এটি বাস্তবায়নে সরকারকেই সরাসরি দায়িত্ব পালন করতে হবে’।
সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, মধ্যস্থতাকারী দেশ এবং চুক্তি পর্যবেক্ষণ কমিটি রাজনৈতিক উপায়ে এটি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
ইসরাইলের চুক্তি লঙ্ঘন:
হিজবুল্লাহ মহাসচিব এ সময় দাবি করে বলেন, ইসরাইল শত শত বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- বিমান ও স্থল হামলা, বাড়িঘর ধ্বংস এবং সীমান্ত অঞ্চলে প্রবেশ।
যদিও হিজবুল্লাহ এই লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে চুপ থেকেছে উল্লেখ করে নাইম কাসেম বলেন, ‘আমরা চুক্তিটির মাধ্যমে ইসরাইলকে একটি সুযোগ দিচ্ছি এবং এর দায়িত্ব লেবানন সরকারের ওপর ন্যস্ত করছি’।
চুক্তির শর্তাবলী:
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, দখলদার ইসরাইলি সেনা ব্লু লাইন (একটি ডি-ফ্যাক্টো সীমান্ত)-এর দক্ষিণ থেকে ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের সরিয়ে দিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ লেবাননে নিজস্ব সেনা মোতায়েনের কথা রয়েছে লেবানন সরকারের।
মানবিক পরিস্থিতি:
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় দেশটিতে এ পর্যন্ত ৪,০৬৩ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে নারী, শিশু এবং স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে।এছাড়া আহতের সংখ্যা ১৬,৬৬৩ জন।
হিজবুল্লাহ প্রধানের হুঁশিয়ারি:
নাইম কাসেম তার বার্তার শেষে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে এটি আরও শক্তিশালী হবে’।
সেই সঙ্গে লেবানন সরকার এই সুযোগ ব্যবহার করে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান আরও দৃঢ় করতে পারে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।