Image description

সম্প্রতি মাইক্রোসফট স্বীকার করেছে যে, গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা প্রদান করেছে তারা। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এই সেবা মূলত ইসরায়েলি জিম্মিদের খোঁজ ও উদ্ধারে সহায়তার জন্য ব্যবহৃত হয়।

মাইক্রোসফট জানায়, তারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে সফটওয়্যার, পেশাদারী সেবা, অ্যাজুর (Azure) ক্লাউড স্টোরেজ ও এআই প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে ভাষা অনুবাদ ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত। যদিও তারা দাবি করেছে, সব অনুরোধ অনুমোদন করেনি এবং নির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে কিছু অনুরোধ প্রত্যাখ্যানও করেছে। তারা বলছে, এই সেবার মাধ্যমে জিম্মিদের জীবন রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে, একইসঙ্গে গাজার সাধারণ মানুষের গোপনীয়তা ও অধিকার রক্ষার বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

এই সহযোগিতায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ এআই প্রযুক্তি ভুলের সম্ভাবনাময়, যা নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানির কারণ হতে পারে।

মাইক্রোসফট বলেছে, তারা এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পায়নি যা ইঙ্গিত দেয় যে তাদের প্রযুক্তি গাজায় সরাসরি মানুষকে লক্ষ্য করে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তারা স্বীকার করেছে, গ্রাহকের নিজস্ব সার্ভার বা ডিভাইসে প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

এই ঘটনার মাধ্যমে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে, যেখানে একটি বেসরকারি কোম্পানি একটি যুদ্ধরত দেশের ওপর প্রযুক্তি ব্যবহারের শর্ত আরোপ করছে। জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির গবেষক এমেলিয়া প্রোবাসকো বলেন, "এটা এক ব্যতিক্রমী মুহূর্ত—যেখানে সরকার নয়, বরং একটি কোম্পানি প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে শর্ত নির্ধারণ করছে।"

ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি কোহন মাইক্রোসফটের স্বচ্ছতার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বলেন, “এই ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে আরও খোলামেলা হওয়া প্রয়োজন।”

গাজা সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অনেকেই নারী ও শিশু। এই পরিস্থিতিতে মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানির সামরিক সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে—যুদ্ধক্ষেত্রে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার কতটা নৈতিক ও মানবিক।