Image description

জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) চরম বিভ্রান্তিকর তথ্য—ছেলের বয়স বাবার চেয়ে ৬৩ বছর বেশি! বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই এক ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দার কান্দি গ্রামের উত্তর পাড়ায়।

ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ওই গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে জিতু মিয়া। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, হারিছ মিয়ার জন্ম ১৯৫০ সালের ১ মার্চ, আর তার ছেলে জিতু মিয়ার জন্ম ১৮৮৭ সালের ২ মার্চ। সে হিসেবে বাবার বয়স বর্তমানে ৭৫ বছর তিন মাস ১৮ দিন আর ছেলের বয়স ১৩৮ বছর ২ মাস ৫ দিন—অর্থাৎ ছেলে বাবার চেয়ে বয়সে ৬৩ বছর ২ মাস বড়!

ভুক্তভোগী জিতু মিয়া কালবেলাকে বলেন, ‘১৫-২০ বছর আগে বিদেশে থাকার সময় দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করাই, তখন সেটা ছিল হাতে লেখা। সেই সময়ের তথ্য ভুলভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রে চলে এসেছে। এখন আমার ১২ বছরের ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করাতে গিয়ে এই সমস্যা ধরা পড়ে। বয়স ১৩৮ বছর দেখানোর কারণে ভর্তি আটকে আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি অশিক্ষিত মানুষ, তখন বুঝিনি এমন ভুল হয়েছে। এখন বয়স ৪০ বছর হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলের কারণে অনেক কাজেই সমস্যা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদন করেছি, টাকা খরচ করেছি, এমনকি কোর্টে এফিডেভিটও করেছি, কিন্তু এখনও কিছুই হয়নি।’

বাবা হারিছ মিয়া বলেন, ছেলে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে অনেক কাজ করতে পারছে না। দ্রুত এই ভুল ঠিক হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়সের ভুলের আনুষ্ঠানিক কোনো সংশোধনের নিয়ম নেই। তবে অনলাইনে আবেদন করলে আমরা যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করব।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার উত্তম কুমার দাস বলেন, মূলত ২০০৭ সালে ভোটার তালিকা তৈরির সময় সার্ভারে এমন ভুলগুলো হয়েছে। আবেদন করলে তা সংশোধনের সুযোগ আছে।

এদিকে, এই ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপই পারে এমন অবাস্তব ভুল সংশোধন করে নাগরিকদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে।