
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এ সময় তারা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করেন।
বৃহস্পতিবার (০৮ মে) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে টেলিফোন আলাপে করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা ‘যে কোনো মূল্যে’ রক্ষা করবে।
মার্কো রুবিও এই আলোচনায় ভারত এবং পাকিস্তানকে উত্তেজনা কমানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় চলমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১৫টি শহরে সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বুধবার রাতভর ও বৃহস্পতিবার সকালে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং গুজরাটসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়। তবে এসব হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছে দেশটি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার জানায়, পাকিস্তানের এই হামলার জবাবে ভারত পাল্টা আক্রমণে লাহোরসহ একাধিক শহরের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা হয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানি আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার ও অন্যান্য ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে এবং পাকিস্তানের একাধিক স্থানের সামরিক স্থাপনা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী।
ভারতের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে আসা হামলার জবাবে শ্রীনগর, পাঠানকোট, অমৃতসর, লুধিয়ানা, চণ্ডীগড়সহ একাধিক শহরে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়। রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে এসব হামলা প্রতিহত করা হয়েছে।
পাকিস্তানের হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ভারত। পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের রাডার ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়েছে ‘হারপি’ ও ‘হারোপ’ ড্রোন, যা মূলত রাডার সিস্টেম শনাক্ত করে হামলা চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা ও তার রুখে দেওয়ার দাবি করা হলেও এ বিষয়ে দেশটির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে দেশটির কোনো কর্মকর্তাও কোনো মন্তব্য করেননি।
এর আগে, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি শহরে একযোগে হামলা চালায় ভারত। ভারত দাবি করে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই অভিযান চালিয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার সারাদিনজুড়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে আরও বহু ড্রোন হামলা চালানো হয়।