
পাকিস্তান-ভারতের উত্তেজনা বেশকিছু দিন যাবৎ চললেও মঙ্গলবার রাতে ভারতের আক্রমণের পর উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সংবাদ বিবৃতিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে জড়িয়েছে। উভয় দেশের ক্রমবর্ধমান সে পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি সংঘাতের সকল পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ উভয় দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার চেতনায় বাংলাদেশ আশাবাদী, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হবে এবং শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলের জনগণের কল্যাণের জন্য শান্তি বিরাজ করবে।
সংযত থাকার আহ্বান॥ ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, উভয়পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ মনে করে কূটনৈতিক দিক থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত। ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিরসন করে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
‘সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উভয় দেশকে বাংলাদেশ অনুরোধ করেছে যেন তারা শান্ত থাকে, ধৈর্য প্রদর্শন করে এবং পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকে।’
বাংলাদেশ আশা করছে, আঞ্চলিক শান্তি, উন্নতি এবং স্থিতিশীলতার জন্য কূটনৈতিকভাবে এই উত্তেজনার অবসান হবে, বলা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
ভারত-পকিস্তানের এই সংঘাতে বাংলাদেশে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। এর পরও বংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ভারতের আকাশপথে কোনো সমস্যা হয় কি না, সেটা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তানের নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। পকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। এ সময় আহতের সংখ্যা ৪৬ জন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আহমেদ শরিফ চৌধুরী আরও জানিয়েন, পাকিস্তানের ছয়টি জায়গায় ২৪টি স্থাপনায় বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে ভারত।
ভারত পরিচালিত ‘অপারেশন সিঁদুর’র জবাবে, ভারত শাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি পাল্টা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩২ জন।
নিহতরা সবাই ভারতের পুঞ্চ জেলায় বসবাসকারী সাধারণ নাগরিক। এই অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছেই অবস্থিত।
সূত্র : বিবিসি বাংলা