Image description

 ১৯৯১ সালের কথা। তখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন পিভি নরসীমা রাও। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত ভারতও বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পিসি আলেক্সান্ডারের অপ্রত্যাশিত ফোন পেলেন মনমোহন সিং। ওপাশ থেকে বলা হল- অর্থমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে তিনি সবার আগে রয়েছেন।

মনমোহন সিংহ তখন ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান। নেদারল্যান্ডসে একটি সম্মেলনে শেষে দেশে ফিরেই ওই ফোনকল পেয়েছিলেন তিনি। এরপর ঘুরে যায় তার জীবনের চাকা, হন ভারতের অর্থনীতি।

 

আলেক্সান্ডার রসিকতা করে মনমোহনকে তিনি বললেন, অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর যদি সবকিছু ঠিকঠাক হয়, আমরা সবাই এর কৃতিত্ব নেব। আর যদি ঠিকঠাক কাজ না হয়, তবে আমাকে বরখাস্ত করা হবে। ‘স্ট্রিক্টলি পারসোনাল: মনমোহন অ্যান্ড গুরশরণ’ বই থেকে জানা গেছে এই তথ্য। বইটির লেখক মনমোহন সিংয়ের মেয়ে দামা সিং।

 

এরপর ১৯৯১ সালের ২১ জুন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মনমোহন সিং। সেই শপথই ছিল ভারতের অর্থনৈতিক আমূল পরিবর্তনের শুরু। দেশটির উদার অর্থনীতির দ্বার খুলে যায় সেসময়।

 

অর্থমন্ত্রী হয়ে মনমোহন সিং বেশিরভাগ শিল্পকে লাইসেন্সের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করেন। একচেটিয়া ও কঠোর বাণিজ্য আইন সংশোধন করেন। করের নতুন ব্যবস্থা চালু করেন। সরকারি খাতে একচেটিয়া ক্ষমতার অবসান ঘটান।

অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বের মধ্য দিয়েই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এরপর ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে মনমোহন সিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন। ওই ঘটনা ছাড়াও দামান সিং তার বইতে বাবা মনমোহন সিং ও মা গুরশরণ কৌরের ১৯৩০ থেকে ২০০৪ সালের জীবনের নানা ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছেন। মা-বাবার সঙ্গে আলাপ এবং বিভিন্ন বই ও আর্কাইভ ঘেঁটে তিনি বইটি লিখেন।

বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির একটি হাসপাতালে মারা যান ৯২ বছর বয়সী মনমোহন সিং।