
পাকিস্তান গত বছর আইএমএফ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের একটি বেইলআউট প্যাকেজ এবং চলতি বছরের মার্চে আরো ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু সহনশীলতা ঋণ অনুমোদন পেয়েছে।কাশ্মীরে প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে পাকিস্তানকে দেয়া ঋণ পুনঃমূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে বলে শুক্রবার (২ মে) ভারতীয় একটি সরকারি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর এক হামলায় ২৬ জন পুরুষ নিহত হওয়ার পর দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এ ঘটনার পর দ্বিপাক্ষিক নানা কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যার ফলে সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
নয়াদিল্লি হামলাকারী তিনজনকে সনাক্ত করেছে, যাদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি নাগরিক বলে দাবি করা হয়েছে। ভারত তাদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসলামাবাদ যেকোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
এ ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। এরপর উভয় দেশই একে অপরের বিমানের জন্য তাদের আকাশপথ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
পাকিস্তান গত বছর আইএমএফ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের একটি বেইলআউট প্যাকেজ এবং চলতি বছরের মার্চে আরো ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু সহনশীলতা ঋণ অনুমোদন পেয়েছে। এই কর্মসূচি পাকিস্তানের ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি পাকিস্তানকে ঋণ খেলাপির হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করেছে।
ভারত এই ঋণগুলোর বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আইএমএফকে এসব ঋণ পর্যালোচনার অনুরোধ করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সরকারি সূত্র। তবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
আইএমএফ এবং ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীর উপদেষ্টা খুররম শেহজাদ বলেছেন, আইএমএফের কর্মসূচি সম্পূর্ণ সঠিক পথে রয়েছে। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক পর্যালোচনাটি ভালো হয়েছে এবং আমরা পুরোপুরি সঠিক পথে রয়েছি।‘
শেহজাদ আরো বলেন, ‘ওয়াশিংটনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। আমরা প্রায় ৭০টি বৈঠক করেছি। পাকিস্তানে বিনিয়োগ এবং সমর্থন দেয়ার আগ্রহ অনেক বেশি।‘
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চলটিকে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই পুরোপুরি নিজেদের বলে দাবি করে। ভারত ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মীরে সশস্ত্র বিদ্রোহে পাকিস্তানের মদত দেয়ার অভিযোগ করে আসছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, তারা কেবল কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের দাবিতে কূটনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়ে থাকে।