
হামাসের সঙ্গে চলমান আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযানের পরিধি আরও বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার সংস্থা ক্যান এ তথ্য জানিয়েছে।
নতুন এ পরিকল্পনায় অতিরিক্ত রিজার্ভ সেনা মোতায়েন করা হবে বলে জানা গেছে। যদিও সেনা সদস্যদের অতিরিক্ত ক্লান্তি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রীর আহ্বানে এ তৎপরতা শুরু হয়েছে।
ক্যান আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার মোরাগ করিডোর ও রাফাহর মধ্যবর্তী এলাকায় একটি নতুন মানবিক অঞ্চল স্থাপন করছে ইসরায়েল। সেখানে নিরাপত্তা যাচাইয়ের পর ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের স্থানান্তর করা হবে। এই অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নজরদারি ও নিরাপত্তার আওতায় ত্রাণ বিতরণ করবে মার্কিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত শুক্রবার ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এয়াল জামির এই অভিযানের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সংগঠন হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরম এই পুনরায় অভিযানের ব্যাপারে সমালোচনা করেছে। এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে সংগঠনটি লিখেছে, আমরা কেন বারবার একই কাজ করে ভিন্ন ফল আশা করছি? কেন গাজার এই বিপর্যয়ের মধ্যে আরও গভীরে ডুবে যাচ্ছি?
তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি চুক্তিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়—যাতে রিজার্ভ সেনাদের জীবন ঝুঁকি কমে এবং আরও হতাহতের ঘটনা এড়ানো যায়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৯ জন জিম্মি গাজায় অবস্থান করছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। অপরদিকে, ইসরায়েলের কারাগারে এখনো ৯ হাজার ৯০০’র বেশি ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন, যাদের অনেকেই নির্যাতন, অপুষ্টি ও চিকিৎসাসেবার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে। এর আগে ১৯ জানুয়ারি থেকে একটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি হয়েছিল।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান ও স্থল অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৩০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।