
পেহেলগাম হামলার পর পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু ‘চিহ্নিত বাড়ি’ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অধিকৃত কাশ্মিরের পেহেলগামের বাইসারান ভ্যালিতে ২৬ জন নিহতের ঘটনার পর ব্যাপকভাবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিবিসি হিন্দির তথ্য অনুযায়ী, অন্ততপক্ষ দশটি বাড়িতে এই অভিযান চালানো হয়েছে। এরকম দু’জন ব্যক্তির সাথে কথা বলেছে বিবিসি হিন্দি।
যাদের একজন আদিল হোসাইন ঠোকার। অনন্তনাগ পুলিশ যে তিনজন সন্দেহভাজনের স্কেচ প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে আদিল হোসাইন ঠোকার নাম রয়েছে।
তবে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়ার এই অভিযানের বিষয়ে পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর কেউই এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। পুলিশ বেশ কিছু মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক রাখলেও এখনো তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
পুলিশের মহাপরিচালকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে যোগাযোগ করেছে বিবিসি হিন্দি। কিন্তু প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত কেউই সাড়া দেয়নি।
আদিল ঠোকারের পরিবার বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছে, ২৫ এপ্রিল রাতে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়।
ঠোকারের মা শাহজাদা বানু বলেন, রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী এবং পুলিশের লোকজন এখানে ছিল। আমি তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম এবং ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম কী দোষ আমাদের। কিন্তু তারা আমাদের চলে যেতে বলে এবং অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
রাত সাড়ে ১২টায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। পুরো এলাকার প্রতিবেশীদেরকে ১০০ মিটার দূরে থাকতে বলা হয়েছিল। সব লোকজনকে সেখান থেকে সরানো হয়েছিল। কেউ কেউ সরিষা ক্ষেতে আবার কেউ কেউ অন্যদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল।
পুলিশ মিজ বানুর দুই ছেলে এবং স্বামীকে গ্রেফতার করেছে বলে জানান তিনি। তার ছেলে আদিল ২০১৮ সাল থেকে নিখোঁজ বলে জানান মিজ বানু।
কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ তিনি লিখেছেন, পেহেলগাম হামলার পরে ভারত সরকারকে উগ্রবাদী এবং নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে ও সতর্ক থাকতে হবে। যারা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে তাদের বিচ্ছিন্ন করা সরকারের উচিত নয়।
এরই মধ্যে কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ টুইটারে লিখেছেন, পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পরে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে একটা লড়াই অবধারিত। উগ্রবাদ এবং নিরীহ মানুষকে হত্যার বিরুদ্ধে কাশ্মিরের মানুষ এখন প্রকাশ্যে কথা বলছে এবং তারা নিজেরাই এটা করছে। এখন জনগণের এই সমর্থনকে আরো শক্তিশালী করার সময় এসেছে। এমন কিছু করা উচিত না যাতে তারা বিচ্ছিন্ন বোধ করে।
তিনি আরো লিখেছেন, দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত। তাদের প্রতি দয়া দেখানো উচিত নয়। কিন্তু নিরীহ মানুষ যাতে এর শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত।