
ফিলিস্তিন—একটি ভূখণ্ড নয়, এক জাতির আত্মা। যে ভূমির জন্য মায়েরা সন্তানকে জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকেন। ফিলিস্তিনের মায়েরা বিদায়ের মুহূর্তে তার সন্তানকে জড়িয়ে ধরেন, কাঁদেন না, বরং চুমু রাখেন তার জীবন্ত পায়ে। এই চিত্রটি শুধু আবেগ নয়, এটি এক নতুন বাস্তবতা, এক অদ্ভুত সুন্দর আত্মত্যাগের নাম। যেখানে অন্য মায়েরা সন্তান হারালে কফিনে চুমু রাখেন, সেখানে ফিলিস্তিনের মা কফিনের চেয়ে জীবন্ত পায়ে চুমু রাখাকে শ্রেষ্ঠ বিদায় বলে মনে করেন। কেননা, তিনি বিশ্বাস করেন—সন্তান আবার ফিরে আসবে রণক্ষেত্রে, বাইতুল মুকাদ্দাসের সম্মান রক্ষার সৈনিক হয়ে।
এই চুমুতে কোনো কান্না নেই, আছে এক নিঃশব্দ গর্ব, এক ঈমানি শক্তি। সন্তান যখন বলে—"আমি যাচ্ছি মা", তখন মা জবাব দেন—“তুমি যাও, শহীদ হয়ে ফেরো—যেন আল-আকসা বেঁচে থাকে।” বিশ্ব যখন মায়ের সংজ্ঞাকে মমতা ও স্নেহে সীমাবদ্ধ রাখে, তখন ফিলিস্তিনের মা দেখিয়ে দিচ্ছেন, "মাতৃত্ব মানে কেবল জন্ম দেওয়া নয়, সন্তানকে ঈমানের পথে উৎসর্গ করাও। "তাঁদের বিশ্বাস—আল্লাহর পথে শহীদ হওয়া সন্তানের জন্য শোক নয়, বরং গর্বই উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া।
এই মায়েদের চোখে অশ্রু দেখা যায় না। চোখে থাকে একধরনের অদ্ভুত স্থিরতা, যা ভরসার গভীরতা প্রকাশ করে। তারা জানেন, সন্তানের কফিন এক সমাপ্তি নয়—বরং এক নতুন শুরুর দ্যুতি। কারণ শহীদরা মরে না, তারা চিরকাল বেঁচে থাকে।
একজন ফিলিস্তিনের মা জানালেন, “আমি কফিনে চুমু রাখিনি, কারণ আমার সন্তান মরেনি। সে আল্লাহর রাস্তায় গেছে। আমি তার পায়ে চুমু রেখেছি, যেন সে জানে—আমি গর্বিত, আমি রাজি ছিলাম।” এই ঘটনাগুলো কেবল একটি ব্যক্তিগত মুহূর্ত নয়, বরং একটি জাতীয় চেতনার প্রতিফলন। বাইতুল মুকাদ্দাসের প্রতি যে ভালোবাসা, তা এমন স্তরে পৌঁছেছে যেখানে জীবন নয়, বরং আত্মা দিয়ে রক্ষার শপথ নেয়া হয়।
বিশ্ব যখন ফিলিস্তিনকে দেখে একটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে, তখন কিছু দৃশ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই লড়াই শুধু ভূমির নয়, এটি বিশ্বাস, ইতিহাস, ও আত্মিক ভালোবাসার লড়াই। শহীদ সন্তানের কফিনে নয়, চুমু রাখা হয় তার জীবন্ত পায়ে—এই বিশ্বাসেই বেঁচে থাকে বাইতুল মুকাদ্দাস।
শহীদের কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মায়ের মুখে নেই কান্না, নেই হতাশা—আছে দৃঢ়তা আর গর্ব। যেন পুরো জাতির শক্তি তার চোখে জমে উঠেছে। এই বাক্য শুধু মায়ের প্রার্থনা নয়, এটি একটি জাতির আত্মিক অস্ত্র—যা ফিলিস্তিনকে বাঁচিয়ে রাখে প্রতিটি হামলার মাঝেও, প্রতিটি বুলেটের বিপরীতে। বিশ্ব যখন ন্যায়বিচারের সংজ্ঞা খুঁজে ফিরছে, ফিলিস্তিনের মায়েরা ত্যাগ, ঈমান, এবং জাতীয় চেতনার নতুন সংজ্ঞা দিয়ে চলেছেন—নীরব অথচ গম্ভীর কণ্ঠে। "তুমি শহীদ হও, বাইতুল মুকাদ্দাস যেন বেঁচে থাকে।"