
যুক্তরাষ্ট্রের আশকারায় মধ্যপ্রাচ্যে কী না করছে ইসরায়েল—হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো কিংবা নিজেদের চেয়ে শক্তিশালী ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি মিসাইল ছোড়াছুড়ি। বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের ছায়াতেই গোটা দুনিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে গাজাকেও একপ্রকার নরকে পরিণত করেছে পুচকে এই দখলদার দেশটি।
মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে ইসরায়েলকে এমন প্রশ্রয় দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার চিরশত্রু ইরানকে রুখতে অন্য খুঁটির জোরে এগোচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর নতুন ইসলামিক নেতৃত্ব ক্ষমতায় বসার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। সিরিয়া থেকে ১,০০০ সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। আর ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন তার অন্যতম মিত্র দেশ ইসরায়েল।
সিরিয়া থেকে এত বড় সংখ্যক সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় রীতিমতো হকচকিয়ে গেছে দেশটি। ইসরায়েলের ভয়ের কারণ হলো—আমেরিকার সেনা সরিয়ে নিলে সিরিয়ায় অনেকটাই ফাঁকা মাঠে শক্তপোক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে তুরস্ক। আর সিরিয়ায় তুরস্কের মোড়লগিরি ইসরায়েলের কাছে মেনে নেওয়া বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।
এছাড়া মার্কিন সেনারা সিরিয়া ছাড়লে, সীমান্তে ইরানের কাছে আরও অরক্ষিত হয়ে পড়বে ইসরায়েল। মূলত এই ভয় থেকেই সিরিয়ায় মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টির বিরোধিতা করছে নেতানিয়াহুর সরকার।
ইতিমধ্যে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের অবহিত করেছে পেন্টাগন। তাই এই পদক্ষেপ থেকে সরে আসতে মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর মতে, সিরিয়াকে আর তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না আমেরিকা। আগামী মাস নাগাদ উত্তর সিরিয়া থেকে নিজেদের সেনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার চিন্তা করছে ট্রাম্প।
আপাতত ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য হলো—মধ্যপ্রাচ্যে ইরান কিংবা অন্যান্য ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোর পুনরুত্থান ঠেকাতে মিত্রদের সঙ্গে কাজ করা।
সম্প্রতি ইরানকে রুখতে উপসাগরীয় অঞ্চলে বি-টু বোমারু বিমান, যুদ্ধজাহাজ ও প্রতিরক্ষা মিসাইল প্রেরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প বেশ কয়েকবার সতর্ক করেছেন—পরমাণু কার্যক্রম চালিয়ে গেলে সেনা অভিযানের সম্মুখীন হবে ইরান। যদিও বিষয়টিকে মোটেও পাত্তা দেয়নি ইরান।
এর আগেও সিরিয়া থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প, কিন্তু তা কার্যকর করেননি।
সিরিয়া থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব। সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে, ইরানের কাছে অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়বে ইসরায়েল।
এই ভয়েই কাচুমাচু হয়ে পড়েছে দখলদার দেশটি। তবে এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে পাচ্ছে না তারা।