
‘২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে এবং অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে সেই দিন এসে গেছে।’ একথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। রুবিও এক্স-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘২০০৮ সালের ভয়াবহ মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিকল্পনায় তাহাউর হোসেন রানার ভূমিকা নিয়ে যে অভিযোগ, তার মুখোমুখি করার জন্য আমরা রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণ করেছি। ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা এই হামলায় প্রাণ হারানো ৬ আমেরিকান-সহ ১৬৬ জনের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছি। আমি খুশি যে সেই দিনটি এসে গিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে যে, ২৬/১১ হামলা বিশ্বকে হতবাক করেছে। দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য ভারতের প্রচেষ্টার প্রতি আমেরিকা তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘৯ এপ্রিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাহাউর হোসেন রানাকে ২০০৮ সালের ভয়াবহ মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনায় তার ভূমিকার জন্য বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে ভারতে হস্তান্তর করে। এই হামলার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারতের প্রচেষ্টাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন করে আসছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন বলেছেন, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের অভিশাপের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত একসাথে কাজ চালিয়ে যাবে।’
ব্রুসের কথায়, রানাকে ভারতের হাতে তুলে দিতে পেরে আমেরিকা ‘অত্যন্ত গর্বিত’। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিন সফরের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিশ্চিত করেছিলেন যে, রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্প সেইসময়ে বলেছিলেন আমেরিকা অবিলম্বে একজন অত্যন্ত হিংস্র ব্যক্তিকে ভারতে ফিরিয়ে দিচ্ছে। অপরাধ দমনে আমরা ভারতের সাথে একসঙ্গে কাজ করি। এই ধরনের সম্পর্ক দুদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক রানাকে বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে আনা হয়েছে। ৬৪ বছরের রানাকে সিসিটিভির নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তারক্ষীরাও নিয়মিত তার ওপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে বলা চলে একেবারে ‘তীক্ষ্ণ’ দৃষ্টি রাখা হয়েছে তার দিকে। মুম্বই হামলার মূল চক্রীর থেকে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। তাই তার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ঝুঁকিও নিতে নারাজ গোয়েন্দারা।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস