
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করলেও তাঁর এ পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে সুবিধা পেতে পারে ব্রাজিল। গতকাল বৃহস্পতিবার এমনটাই বলেছেন অর্থনীতিবিদেরা। লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির পণ্যের ওপরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
গত বুধবার ট্রাম্পের ওই শুল্ক ঘোষণার পর দেশে দেশে শেয়ারবাজারে সূচকের পতন হলেও ব্রাজিলের স্থানীয় পুঁজিবাজারগুলো ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে। দেশটির মুদ্রা রিয়ালের মানও মার্কিন ডলারের বিপরীতে হয়েছে ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ। নতুন করে শুল্কারোপের আগে ১ ডলার সমান ছিল ৫ দশমিক ৬০ ব্রাজিলীয় রিয়াল। ডলারের বিপরীতে রিয়ালের এ অঙ্ক এখন এর নিচে নেমেছে।
ইতিমধ্যে ব্রাজিলের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক বেড়েছে দশমিক ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে ব্রাজিলের কাঁধে তুলনামূলক কম শুল্কের বোঝা চাপানোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে, যা দেশটিকে বড় ধরনের বাণিজ্যঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার অর্থপ্রবাহের পথ পরিবর্তনকে উৎসাহিত করছে।
ব্রাজিলের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক বেড়েছে দশমিক ২৩ শতাংশ পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে ব্রাজিলের কাঁধে তুলনামূলক কম শুল্কের বোঝা চাপানোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে, যা দেশটিকে বড় ধরনের বাণিজ্যঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার অর্থপ্রবাহের পথ পরিবর্তনকে উৎসাহিত করছে।
এক্সপির গবেষক দল বলেছে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ‘পুরোপুরি খারাপ, কিন্তু ব্রাজিলের জন্য সম্ভাবনার’। এই শুল্ক আরোপকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলে তা দক্ষিণ আমেরিকার এ বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তির (ব্রাজিল) জন্য সুবিধা বয়ে আনতে পারে। সেই সঙ্গে দেশটিজুড়ে ও বড় পরিসরে লাতিন আমেরিকার অবকাঠামো খাতে চীনের বিনিয়োগ গতিশীল হতে পারে।
এক্সপি বলেছে, চীনা বাণিজ্যযুদ্ধ সত্ত্বেও ২০১৮–২০২০ মেয়াদে চীনের সয়াবিন ও শস্যের মতো পণ্যের চাহিদা যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিবর্তিত হয়ে ব্রাজিলমুখী হয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিটিজি প্যাকচুয়ালের অংশীদার ও অর্থনীতিবিদ ইয়ানা ফেরাও বলেন, যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বড় ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ তাঁদের জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, অন্যান্য দেশের ওপর শুল্কের বোঝা অনেকটা বেড়েছে। এতে ব্রাজিলের নির্দিষ্ট কিছু খাত তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পেতে পারে।’
যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বড় ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ তাঁদের জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে। অন্যান্য দেশের ওপর শুল্কের বোঝা অনেকটা বেড়েছে। এতে ব্রাজিলের নির্দিষ্ট কিছু খাত তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পেতে পারে।ইয়ানা ফেরাও, বিটিজি প্যাকচুয়ালের অংশীদার ও অর্থনীতিবিদ
ব্রাজিলের সাও পাওলোর আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভার্দে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের মুখ্য বিনিয়োগ কর্মকর্তা লুইস স্টলবার্জার বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ব্রাজিলের ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক এটিই বোঝাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে শুল্কের বোঝা চাপলেও দেশটি ‘উচ্চ সুবিধা’ পেয়েছে।
‘প্রশ্ন হলো, ব্রাজিল এ সুবিধা নিতে পারবে কি না’, বলেন লুইস স্টলবার্জার।
বিশ্বে সয়াবিন, সুতা, মাংস ও মুরগির সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক ব্রাজিল। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্রাজিলের বাণিজ্য সম্পর্কে মার্কিন অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ব্রাজিলের সঙ্গে বাণিজ্যে ২০০৮ সাল থেকেই উদ্বৃত্তে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এটি ২৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারে পৌঁছায়। ওই বছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আট হাজার কোটি ডলারের বেশি।