
ফিলিস্তিনে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপন এবং অতি-ডানপন্থী বসতি স্থাপনকারীদের কার্যকলাপ প্রচারের জন্য ১০০টিরও বেশি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে জনপ্রিয় সামাজিকমাধ্যম ফেসবুক।
জায়ান্ট সামাজিকমাধ্যমটির এই প্রচারণা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শঙ্কা তৈরি করেছে।
সোমবার (৩১ মার্চ) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমটির তদন্তে দেখা গেছে, এসব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি, স্কুল এবং খেলার মাঠ ধ্বংস করার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে দখলদার সামরিক বাহিনীর জন্য অর্থ সংগ্রহের আবেদনও জানানো হয়েছে।
আল জাজিরা যেসব বিজ্ঞাপন চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে অন্তত চারটি ছিল দখলকৃত পশ্চিম তীরের গ্রিন লাইনের ২০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত আরিয়েলের অবৈধ ইসরায়েলি বসতিতে সম্পত্তি বিক্রির প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন। হিব্রু ভাষায় ও ইসরায়েলি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপনগুলোতে পশ্চিম তীরে বাড়ি কেনার অফার দেওয়া হয়েছে। ‘রামাত আদেরেত’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে এসব বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে।
ইসরায়েলি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলির কমপক্ষে ৫২টি বিজ্ঞাপনে পশ্চিম তীরজুড়ে বসতিগুলিতে সম্পত্তি বিক্রির প্রচার পাওয়া গেছে, যা ইসরায়েলজুড়ে ক্রেতাদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে নির্মিত। এই বিজ্ঞাপনগুলো প্রথম ২০২৪ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয় এবং এগুলোর বেশ কয়েকটি ফেসবুকে এখনও সক্রিয়।
ইতোমধ্যে বিতর্কিত কিছু বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ফেসবুকের স্বত্বাধিকারী কোম্পানি মেটা। যদিও ফিলিস্তিনি জমিতে নির্মিত অবৈধ বসতি স্থাপনের প্রচার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা তা স্পষ্ট করেনি কর্তৃপক্ষ।
মেটা আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ‘যেকোনো বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে তাদের প্ল্যাটফর্মে প্রচার করা হয়। তবে সামাজিক সমস্যা, নির্বাচন এবং রাজনীতির নীতি লঙ্ঘন করতে পারে এমন কিছু বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ’
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, মেটার এই বিজ্ঞাপনগুলির অনুমোদন, অর্থ গ্রহণ এবং প্রকাশ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে। যুক্তরাজ্যের একজন সংসদ সদস্য ব্রায়ান লেইসম্যান মেটার এই কর্মকাণ্ডকে ‘অত্যন্ত চিন্তার বিষয়’ বলে অভিহিত করেছেন।