Image description
 

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন দেশটির গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,

 

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন দেশটির গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং। গতকাল এক বিবৃতিতে প্রেস উইং জানায়, গ্যাবার্ডের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এবং সুনামের জন্য ক্ষতিকারক।

বৈশ্বিক গোয়েন্দাপ্রধানদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে নয়াদিল্লি সফররত তুলসী গ্যাবার্ড এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুর্ভাগ্যজনক নিপীড়ন, হত্যা ও অন্যান্য নির্যাতন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের উদ্বেগের একটি প্রধান ক্ষেত্র।’

 

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আলোচনা মাত্র শুরু হচ্ছে; কিন্তু এটা উদ্বেগের প্রধান জায়গার একটি হয়ে রয়েছে।’

 

সাক্ষাৎকারে ‘ইসলামিক খিলাফতের’ আদর্শ নিয়েও কথা বলেছেন তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি বলেন, ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈশ্বিক তৎপরতা একই আদর্শ ও লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত হয়। সেই আদর্শ ও লক্ষ্য হলো ইসলামপন্থী খিলাফতের মাধ্যমে শাসন করা। এতে অবশ্যই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছাড়া অন্য যেকোনো ধর্মের মানুষের ওপর প্রভাব পড়ে। তারা এটা সন্ত্রাস ও অন্যান্য সহিংস পন্থায় বাস্তবায়নের পথ বেছে নেয়।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিশ্বজুড়ে ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদকে’ পরাজিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন তুলসী গ্যাবার্ড।

গ্যাবার্ডের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্য লক্ষ করেছে, যেখানে তিনি বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর ‘নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ’ তুলেছেন এবং বলেছেন যে বাংলাদেশে ‘ইসলামী সন্ত্রাসের হুমকি’ মূলত ‘ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও উদ্দেশ্যে’র সঙ্গে জড়িত। তার এ মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও খ্যাতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ বরাবরই শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল ইসলামের চর্চার জন্য সুপরিচিত এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। গ্যাবার্ডের এ মন্তব্য কোনো প্রমাণ বা নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, বরং একটি দেশকে ‘অন্যায্যভাবে কালিমালিপ্ত’ করার প্রচেষ্টা।

প্রেস উইং জানায়, বিশ্বব্যাপী উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব জাতির সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গঠনমূলক সংলাপ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।