
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় চলমান যুদ্ধকে থামানোর কোনও ইচ্ছা পোষণ করেন না। বরং তিনি চান এই যুদ্ধ চিরকাল চলুক, কারণ এটি তার রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করে।
ইসরায়েলি ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান এ কথা বলেছেন। গোলান মনে করেন, নেতানিয়াহুর কাছে গাজার পরিস্থিতি যতটুকু মানুষের জীবন-মৃত্যু কিংবা যুদ্ধবিরতির আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থ এবং ক্ষমতা ধরে রাখা।
বিরোধী নেতা গোলান ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দৈনিক মারিভকে বলেন, নেতানিয়াহু ক্রমাগতভাবে ইসরায়েলের নাগরিকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন, যাতে জরুরি অবস্থা এবং ক্রমাগত অশান্তির মধ্যে তারা থাকতে পারে। কারণ এটি তাকে রাজনৈতিকভাবে উপকারে আসে।
তিনি আরও বলেন, কত সৈন্য মারা গেছে, বা যেসব মানুষ গাজায় আটকে আছেন তাদের জীবন নিয়ে নেতানিয়াহুর কোনো ভাবনা নেই। তার কাছে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তার রাজনৈতিক লাভ।
গোলান জানান, এই যুদ্ধের মাধ্যমে নেতানিয়াহু তার ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক প্রয়োজন পূরণ করতে চান, আর তাই তিনি যুদ্ধ থামাতে চান না।
গোলান আরো দাবি করেন, নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় বসতে চাইছেন না। তিনি বলেন, ইসরায়েল একটি চুক্তি সই করেছিল, যা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করার কথা ছিল। তবে ইসরায়েল সেই আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছে।
নেতানিয়াহুর এই অবস্থানকে সমর্থন না করে গোলান বলেছেন, যারা জিম্মিদের মুক্তি চায়, তাদেরকে একটি সহজ ব্যাপার বুঝতে হবে— আমাদের দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে হবে এবং গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ থেকে সরে যেতে হবে।
গোলান এর আগেও ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের নীতি এবং নেতানিয়াহুর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একাধিকবার মত প্রকাশ করেছেন। এর ফলে গাজার যুদ্ধের পরিস্থিতি এবং সেই সংক্রান্ত আলোচনার জন্য নেতানিয়াহুর অবস্থানকে নিয়ে বিরোধী নেতাদের মধ্যে ক্রমাগত সমালোচনা দেখা গেছে।
এই পরিস্থিতি তীব্র হওয়ায়, ইসরায়েলের রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতানিয়াহুর এই কার্যকলাপ আরও বড় প্রশ্ন তুলছে। যেভাবে তিনি যুদ্ধের সময়কালে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাইছেন, তাতে ভবিষ্যতে আরও বড় বিরোধী আন্দোলন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।