
ছয় জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে থাকা যে ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দির ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল তাদের মুক্তি দিতে দেরি হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
রোববার দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস তাদের শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির পরিকল্পনা স্থগিত থাকবে।
শনিবার মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে এসব ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। এদের মধ্যে ৪৪৫ জনকে যুদ্ধ চলাকালে গাজা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। বাকিরা দীর্ঘ সময় ধরে বা কেউ কেউ আজীবন কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি আছেন বলে জানিয়েছে হামাস।
ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে শনিবারের মধ্যে ফিলিস্তিনি বন্দিরা মুক্তি না পাওয়ায় গাজার ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে শঙ্কা আরও গভীর হয়েছে।
রয়টার্স জানায়, রোববার ভোররাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া পরবর্তী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত’ ইসরায়েল ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে পাঠানোর অপেক্ষায় থাকবে।
এই বিবৃতিতে হামাসের সাম্প্রতিক জিম্মি হস্তান্তরের উল্লেখ করা হয়েছে; যার বিষয়ে জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা শ্রদ্ধাশীল না থাকায় অনুষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি হয়ে উঠেছে।
জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আগে তাদের অনেক লোকজনের সামনে মঞ্চে ওঠাচ্ছে হামাস আর রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তরের আগে কখনো কখনো তাদের দিয়ে বক্তব্য দেওয়াচ্ছে। নিহত জিম্মিদের কফিনগুলো ভিড়ের মধ্য দিয়ে বহন করে নিয়ে গেছে। এসব নিয়েই আপত্তি তুলেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি ঘোষণায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে হামাস এক মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি ‘বার বার ভঙ্গ’ করেছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী হামাস শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল এসব অভিযোগ তুলে ঘোষণাটি দিয়েছে।
১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বে যে ৩৩ জন জিম্মিকে হামাসের মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল এই ছয়জনকে ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ হয়। এই ছয়জন প্রথম পর্বে মুক্তি পাওয়া সর্বশেষ জীবিত জিম্মি ছিল।
আরও চারজন ইসরায়েলি জিম্মির মৃতদেহ হামাসের আগামী সপ্তাহে ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে। এই মৃতদেহগুলো ফেরত দেওয়া সময়ে না বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সময়েও ইসরায়েল তাদের কথিত ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান’ বাদ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে কি না, তা পরিষ্কার হয়নি।