Image description

ভূমিকম্পের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের ছাদ ও দেয়ালে ফাটল দেখা গেছে। এতে ওই হলের শিক্ষার্থীদের নির্মানাধীন কামারুজ্জামান হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, হল প্রশাসন এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ভগ্নদশার মন্নুজান হলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর মনে নিরাপত্তার তীব্র ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলটি অনেক পুরোনো এবং সাম্প্রতিক সময়ে বেহাল দশা হয়ে ছিল। খসে পড়েছিল হলের বিভিন্ন জায়গার ছাদের পলেস্তারা। আজকের ভূমিকম্পের পর হলের পশ্চিম ব্লকের একাংশ হেলে পড়েছে এবং দেয়াল ও ছাদের একাধিক জায়গায় বড় ফাটল দেখা গেছে। এতে তাদের মাঝে নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

 
 

সকালের ভূমিকম্প শেষে তারা হল থেকে তাদের স্থানান্তরের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তাদের দাবিতে সংহতি জানায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। রাকসু নেতারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে জুমার নামাজ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।

পরে দুপুর আড়াইটায় প্রশাসন ভবনের সভাকক্ষে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, হল প্রশাসন, রাকসু ভিপি সহ-সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আম্মারসহ রাকসু নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এক সভায় বসেন। সভায় হলটির শিক্ষার্থীদের নির্মানাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, আজকের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হলের শিক্ষার্থীরা নতুন হলে স্থানান্তরিত হতে পারবেন। তবে হলের দুইজনের কক্ষে তিনজন করে থাকতে হবে। এ ছাড়াও হলটির নির্মানকাজ শেষ না হওয়ায় সেখানে বৈদ্যুতিক লাইন দেওয়া হয়নি এবং পানিরও সংকট রয়েছে। এ ছাড়া হলের খাটের কাজ শেষ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদেও ফ্লোরে থাকতে হবে। তাদের কিছুটা কষ্ট হলেও নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে হলটির একধিক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন হলে কক্ষ সংযুক্তকরন প্রক্রিয়ার জন্য আজ তারা নতুন হলে যাবেন না। আজ রাতের ভেতর তাদের কক্ষ সংযুক্ত করার কাজ শেষ হলে আগামীকাল নতুন হলে যাবেন।

মন্নুজান হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলটিতে রয়েছে ইলেক্ট্রিসিটির গোলযোগ, বিভিন্ন ব্লক ও তলার বাথরুমগুলোর লোহার মরিচা ধরা পাইপ থেকে চুইয়ে পড়ে পানি এবং ছাদের ঢালাই ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এ অবস্থায় আজকের ভূমিকম্পে হলটির শিক্ষার্থীদের মনে তীব্র নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্নুজান হল সংসদের সহ-সভাপতি সুমাইয়া জাহান বলেন, ‘আমরা হলের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। পরে সেদিনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের হল পরিদর্শনে আসেন। তখন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ জানায় হলটির ভবনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখানে নতুন করে কোনো মেরামতে স্থায়ী কোনো সমাধান হবে না। আজকে যে ভূমিকম্প হয়েছে এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা হতভম্ব হয়ে পড়েছে। এ সময় খসে পড়া ছাদের নিচে থাকা শিক্ষার্থীরা ভয়ে ছুটোছুটি শুরু করেছিলেন। তারা তীব্র নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমাদের সুস্পষ্ট দাবি আমাদের স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা দ্রুত কর্মসূচিতে যাব।’