
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দুই পদ— সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এ জয় পেয়েছে ইসলামি ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’। চাকসুর ভিপি পদে বিজয়ী হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি। জিএস পদে জয়ী হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী সাঈদ বিন হাবিব।
ভোট গণনা শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করে। নির্বাচিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন হলো। খুবই চমৎকারভাবে এই নির্বাচন হয়েছে। ফলাফল ঘোষণার পর আল্লাহ আপনাদের সবার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের শিক্ষার্থী ভাইবোনদের যারা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা তাদের কাছে গিয়ে তাদের কথা জানার চেষ্টা করেছি। তারাও আমাদের সম্মান করেছেন, ভালোবেসেছেন। তারা যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা আমাদের কাছে আমানত। যে দায়িত্বের আমানত তারা দিয়েছেন সেটা যেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করতে পারি। আমরা বলেছি, যদি আমাদের দায়িত্বের ব্যপারে কোনও প্রশ্ন থাকে আমাদের ভাইবোনেরা আমাদের সঠিক পথে রাখবেন। এ জন্য তারা আমাদের বুদ্ধি দেবেন, পরামর্শ দেবেন এবং সমালোচনা করবেন।
ইব্রাহিম হোসেন রনি আরও বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি নির্বাচন থেকে শুরু করে যারা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সবাইকে। বিশেষ করে সাংবাদিক, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। আমি মনে করি এই নির্বাচনে কেউই পরাজিত নয়। আমরা অনেক কিছু শিখেছি। আমাদের যে চিন্তা-সৃজনশীলতা আছে যেগুলো আমরা বিভিন্ন প্রার্থীদের তুলে ধরতে দেখেছি এই নির্বাচনে। আমি মনে করি যদি সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকে, আমরা সবাই মিলে যদি একটা প্লাটফর্মে পরিণত হই তাহলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ সারা বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, ইনশাল্লাহ। আমরা যে কাজগুলো করবো ছাত্রছাত্রীদের অধিকার আদায়ের জন্য একটি বড় প্লাটফর্মে পরিণত হবে, ইনশাল্লাহ।
চাকসুর এই নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নতুন নেতৃত্ব বেছে নিয়েছে, যা নিয়ে শিক্ষাঙ্গণে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো চাকসু নির্বাচন। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এবারের নির্বাচনে ১৩টি প্যানেল অংশ নেয়, যেখানে ২৩২টি পদে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ৫১৮ জন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে, আর ফলাফল গণনা করা হয় অপটিক্যাল মার্ক রিডার (ওএমআর) পদ্ধতিতে।