
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল বিপুল বিজয় লাভ করেছে। ২৮টি কেন্দ্রীয় পদে তাদের প্রার্থীরা ২২টি পদ জয়ী হয়েছেন। আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে সিনেট ভবনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করা হয়।
সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে মো. আবু সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৩ এবং উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট; বৈষম্যবিরোধী আব্দুল কাদের পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ এবং প্রতিরোধ পর্ষদের তাসনিম আফরোজ ইমি পেয়েছেন ৬৮ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোটে জয়লাভ করেছেন। যেখানে তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট; প্রতিরোধ প্যানেলের মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯; স্বতন্ত্র আরাফাত চৌধুরী পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৪; এবং বৈষম্যবিরোধী আবু বাকের মজুমদার পেয়েছেন ২ হাজার ১৩১ ভোট।
সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে মুহিউদ্দিন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোটে জয়ী হয়েছেন; পথপ্রদর্শক ছাত্রদল সমর্থিত তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫৬৪ ভোট; তাহমীদ আল মুদাসসীর পেয়েছেন ৩৮ ভোট। প্রতিরোধ প্যানেলের জাবির আহমেদ জুবেল পেয়েছেন ১ হাজার ৫১১; মহিউদ্দিন রনি পেয়েছেন ১ হাজার ১৩৭; আশরেফা খাতুন পেয়েছেন ৯০০; আশিকুর রহমাস জিম পেয়েছেন ৭৯৬; এবং হাসিব আল ইসলাম পেয়েছেন ৫২০ ভোট।
শিবির সমর্থিত বিভিন্ন সম্পাদক পদে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী’ জোটের জয়ী প্রার্থীরা হলেন: মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতেমা তাসনিম জুমা (১০ হাজার ৬৩১ ভোট), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইকবাল হায়দার (৭ হাজার ৮৩৩ ভোট), আন্তর্জাতিক সম্পাদক খান জসিম (৯ হাজার ৭০৬ ভোট), ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ (৯ হাজার ৬১ ভোট), ক্রীড়া সম্পাদক আরমান হোসাইন (৭ হাজার ২৫৫ ভোট), কমন রুম–রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক উম্মে ছালমা (৯ হাজার ৯২০ ভোট), মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক সাখাওয়াত জাকারিয়া (১১ হাজার ৭৪৭ ভোট), স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এম এম আল মিনহাজ (৭ হাজার ৩৮ ভোট), এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম (৯ হাজার ৩৪৪ ভোট)।
শিবির প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সমাজসেবা সম্পাদক পদে যুবাইর বিন নেছারী (৭ হাজার ৬০৮ ভোট), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ (৭ হাজার ৭৮২ ভোট) এবং গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সানজিদা আহমেদ তন্বি (১১ হাজার ৭০৮ ভোট) জয় লাভ করেছেন।
শিবিরের প্যানেলের সদস্যদের হয়েছেন- ১০ জন। তারা হলেন, সর্ব মিত্র চাকমা(৮ হাজার ৯৮৮) সাবিকুন নাহার তামান্না (১০ হাজার ৮৪) ইমরান হোসাইন (৬ হাজার ২৫৬) আনাস বিন মনির (৫ হাজার ১৫) মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ (৫ হাজার ১৫) রাইসুল ইসলাম (৪ হাজার ৫৩৫) মো. শাহিনুর রহমান (৪ হাজার ৩৯০) আফসানা আক্তার (৫ হাজার ৭৪৭) রায়হান উদ্দিন (৫ হাজার ৮২) বেলাল হোসেন অপু (৪ হাজার ৮৬৫), তাজিনুর রহমান (৫ হাজার ৬৯০)।
শিবিরের প্যানেলের বাইরে রয়েছেন ৩ জন। তারা হলেন, উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া (৪ হাজার ২০৯), হেমা চাকমা (৪ হাজার ৯০৮)।
নির্বাচনে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী ২৮টি কেন্দ্রীয় পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে, যেখানে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৯,৮৭৪ জন, যাদের মধ্যে ছাত্রী ছিল ১৮,৯৫৯ জন এবং ছাত্র ২০,৯১৫ জন।
এরপর ভোটারদের মধ্যে শতকরা গড় ভোটগ্রহণ ছিল ৭৮–৮০ শতাংশের মধ্যে।
একই সঙ্গে ফল ঘোষণার পরই ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা ও আবদুল কাদের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং নানা কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।