Image description

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছে ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটভুক্ত বামপন্থী সংগঠনগুলো। এরই মধ্যে ‘জমিদার ভবন’ লেখার ছবি তোলায় উপাচার্যের ‘হয়রানি’র প্রতিবাদে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়েছেন প্রক্টরের পদত্যাগের দাবির আন্দোলনে। এদিকে বামপন্থী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের হাতে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মুখোমুখি অবস্থানে এই চার পক্ষের আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন বামপন্থী সংগঠনগুলো। সোমবারের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চবি শাখা ছাত্রদল প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের পাশাপাশি প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন করে প্রতিবাদ জানায়। একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটও প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান তোলে। এ ছাড়া দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার, ফেসবুকে স্লাট-শেমিং এবং নারী শিক্ষার্থীদের মানহানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। অন্যদিকে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা সহকারী প্রক্টরকে হেনস্তার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলন করে।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ স্যারকে গতকাল বামপন্থী শিক্ষার্থীরা অযথা লাঞ্ছিত ও হেনস্তা করেছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় স্যারের ভূমিকাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু তিনি ইতোমধ্যেই বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। তারপরও তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপমান করা ও মব সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা আমাদের গভীরভাবে দুঃখিত করেছে। আমরা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বারবার স্থানীয়দের হাতে শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হলেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বরং আহতদের চিকিৎসা না দিয়ে প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা বলেন, প্রশাসন পদত্যাগ না করলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এক জুনিয়রের উপর হামলাকারী ব্যক্তিরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোন সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারেনি। এই ঘটনায় যারা দোষী তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা আজকে প্রশাসনের ব্যর্থ ব্যক্তিদের লাল কার্ড দেখিয়েছি। তাঁরা পদত্যাগ না করলে আন্দোলন চলবে। এছাড়া দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছি।

চবি শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির বলেন, আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীর ব্যানারে ভিসি স্যারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। এতে হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর রয়েছে। স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা হিসেবে দায়িত্বহীন প্রক্টরিয়াল বডি চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের সাত দফার প্রথম দাবি, এই প্রক্টরিয়াল বডি তাদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করবে। আমরা ভিসি স্যারের কাছে জানাই, আগামীকালের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করলে প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলিয়ে ধারাবাহিক কঠোর অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।