
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও জোবরা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট বাজারের পূর্ব সীমা থেকে পূর্বদিকে রেলগেট পর্যন্ত গতকাল দুপুর ২টা থেকে আজ সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষ শুরু। টানা ৫ ঘণ্টা সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব আসার পর সংঘর্ষ বন্ধ হয়। ততক্ষণে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ আহত ছাড়িয়ে যায় ৪ শতাধিক।
গতকাল টানা ৬ ঘণ্টা ধরে স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৪৫০-এর অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এতে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের পর গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, জেলা প্রশাসক ও গ্রামের কয়েকজন প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসে প্রশাসন। এ সংঘর্ষের কারণ ও সমাধান নিয়ে মতামত দেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য দাবি জানায় প্রশাসন। এছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে তার তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। তবে, পরবর্তীতে অভিযোগ উঠে ওই ছাত্রী দারোয়ানের সঙ্গে তর্কের একপর্যায়ে তাকে চড় মারেন। পরে ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।’